খালেদার মুক্তি নিয়ে আশা ছাড়েননি আইনজীবীরা
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:১৩
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। ২০১৮ সালের এই দিনে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। সেদিন থেকেই তিনি কারাগারে আছেন। দুই বছর ধরে কারাবন্দি থাকলেও খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা। তবে তারা আশা ছাড়েননি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেজবা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। রায় হয়েছে জিয়া অরফানেজ এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায়। এই দুটিতে জামিন পেলেই তিনি মুক্ত হবেন। বর্তমানে মামলা দুটির একটি হাইকোর্ট এবং আরেকটি আপিল বিভাগে পেন্ডিং রয়েছে। বাকি ৩৪টি মামলা খালেদা জিয়ার জামিনে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।’
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার নামে হাসপাতালে আটক করে রাখা হয়েছে। বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে তারাও বড় ধরণের কোনো আন্দোলন করতে পারছে না। সরকার এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে খালেদা জিয়ার প্রতি অবিচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি যেদিন সত্যিকারের বড় একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে, সেইদিন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। আমরা আইনে প্রক্রিয়া মাধ্যমে জামিনের জন্য বার বার চেষ্টা করেছি। খালেদা জিয়া অসুস্থ, বয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও উনার প্রতি কোনো সুদৃষ্টি দেওয়া হয় নাই। ফলে তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
মেজবাহ আরও বলেন, ‘এ দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের পক্ষ কথা বলার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি অত্যন্ত জরুরি। তিনি সারাদেশের মানুষের জন্য যেভাবে কথা বলতেন, অন্য কেউ সেটা বলতে পারছেন না। খালেদা জিয়াকে আটক রেখে জনসাধারণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না জানিয়ে তার সুচিকিৎসার জন্য আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এরপর গতবছরের ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই সময় থেকেই তিনি হাসপাতালে রয়েছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ আদালত। কারাগারে থাকা অবস্থায় এই মামলায় উচ্চ আদালত তার সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। ওই বছর ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাকে সাত বছর কারাদণ্ড দেয় আদালত। ফলে দুই মামলায় তার ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।