১০ বছরেও হয়নি শিবিরের হাতে নিহত ফারুক হত্যার বিচার
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৫৮
রাবি: হত্যার ১০ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি ছাত্র শিবিরের হাতে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার বিচার। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারুককে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহীদ ফারুক হোসনের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে ক্যাম্পাসে শোক র্যালি ও সমাবেশে করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ র্যালি নিয়ে শহীদ ফারুক হোসেনের স্মৃতি বিজড়িত শাহ্ মখদুম হলের সামনে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, রাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, ফারুকের বোন আসমা বেগম, সহ-সভাপতি কাজী লিংকন।
বক্তারা বলেন, ‘গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারুককে ২০১০ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ ফারুক হত্যার ১০ বছর পার হয়ে গেলেও আমরা এর বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত আমাদের ভাই হত্যার বিচার চাই।’ এসময় ফারুক হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা এবং তার বোনের চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানান।
জানা যায়, ফারুক হত্যা মামলার আসামিদের বেশিরভাগ জামিনে রয়েছেন। কয়েকজন মারাও গেছেন। সাক্ষীরা সময়মতো আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচার কার্যক্রম বর্তমানে থমকে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, হল দখলকে কেন্দ্র করে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় শিবির কর্মীরা। এতে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। পরে তাকে ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখা হয়। ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতসহ শিবিরের ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেন।
ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ২৮ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আদালতে ১২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কেন্দ্রীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমান, রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলাম, শিবিরকর্মী রুহুল আমিন ও বাপ্পীসহ ১১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
পরে এই হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে জামায়াত নেতা মুজাহিদ ও নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন সাঈদী। তবে অভিযুক্ত শিবির নেতাকর্মীদের অধিকাংশই জামিনে রয়েছে।
অন্যদিকে, শহীদ ফারুকের বোন আসমা বেগমের চাকরি দীর্ঘ ৭ বছরেও স্থায়ী করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ছিলেন সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ নিক্সন, সাদ্দাম হোসেন, মিজানুর রহমান সিনহা, আরিফ বিন জহির, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ, মুশফিক তাহমিদ তন্ময়, দফতর সম্পাদক আবুল বাশারসহ বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা, আসামিদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সনদপত্র বাতিল ও ফারুকের বোন আসমা বেগমের চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানান।
ছাত্র শিবির ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন ফারুক হোসেন হত্যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়