‘৩২০০ ইউনিয়নে আর্সেনিকের ঝুঁকি নিরসনে নলকূপ পরীক্ষা করা হবে’
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:৪১
সংসদ ভবন থেকে: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সারাদেশের ৩৩৫টি উপজেলার ৩২০০ ইউনিয়ন পরিষদের তিন (ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ ও এনজিও) সংস্থার সমন্বয়ে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসনকল্পে ৮০ লাখ নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি আছে কিনা পরীক্ষা করা হবে। আর্সেনিকের উপস্থিতি শনাক্ত হলে ওই নলকূপগুলোকে ‘লাল রং’ এবং আর্সেনিক মুক্ত নলকূপগুলো ‘সবুজ রং’ চিহ্ন এঁকে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) টেবিলে উত্থাপিত এম আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকালে এ অধিবেশন শুরু হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে ২০০৩ সালে আর্সেনিক শনাক্তে একটা জরিপ হয়েছিল। ওই জরিপে দেশের ২৭১ উপজেলার প্রায় ৫০ লাখ নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত (৫০পিপিবির উপরে) আর্সেনিক পাওয়া গেছে। পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসনকল্পে ৩১টি জেলার ১১৭ উপজেলার ১ হাজার ২৯০টি ইউপির প্রায় ২ লাখ আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানির উৎস স্থাপন করা হয়েছে। পল্লী অঞ্চলে ৮০ হাজার ৫৫১টি বিভিন্ন ধরনের পানি উৎস স্থাপন করা হয়েছে এবং পল্লী অঞ্চলে আরও ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৫টি বিভিন্ন ধরনের পানির উৎস স্থাপন করা হচ্ছে।’
এ কে এম রহমতুল্লাহর এক মৌখিক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে গৃহকর পুনঃমূল্যায়নের জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঢাকার দুই সিটির সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলো গৃহ কর মূল্যায়নের আওতায় আনা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভবনের নকশার অনুমোদন দিয়ে থাকে। তাই নকশাবহির্ভূত যে কোন কার্যক্রমের বিষয়ে এসব উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। আর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাইরে নকশার অনুমোদন দিয়ে থাকে সিটি ও পৌরসভা। অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মিত ভবনের অনুমতি বাতিল, ভবনে পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ইত্যাদি সংশ্লিস্ট সংস্থাসমূহের নিয়মিত কার্যক্রম।’
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা (যশলদিলয়া) পানি শোধনাগার (ফেজ-১) প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১০ অক্টোবর। এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীতে প্রতিদিন পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনে সর্বদা বিশুদ্ধ পানি সররবাহ করে আসছে। এক্ষেত্রে ভূ-গর্ভস্থ পানি অর্থাৎ গভীর নলকূপের পানি ক্লোরিনেশনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে লাইনে সরবরাহ করা হয়; আর ভূ-উপরিস্থ অর্থাৎ পানি শোধনাগারের (নদীর) পানি প্রি-ট্রিটমেন্টসহ কমপক্ষে তিন স্তরে বিশুদ্ধ করে লাইনে সরবরাহ করা হয়। তবে, কখনও কখনো পাইপ লাইনে ত্রুটির কারণে পানি দূষণের ঘটনা ঘটে, যা নিরসনে ঢাকা ওয়াসা ট্রেন্সলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিএমএ চালু করে সমস্ত পুরনো পাইপ লাইন পরিবর্তনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’
সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটিতে দৈনিক পানির চাহিদা ২২৫ থেকে ২৪৫ কোটি লিটার। তবে চাহিদার বিপরীতে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ করছে ২৫৫ কোটি লিটার অর্থ চাহিদার চেয়ে ১০ কোটি লিটার বেশি।’
কাজী নাবিল আহমেদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিকার কমিটির ১১৬তম সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে আগামী সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বিভাগীয় সদর দফতরে করা যাবে।’ তবে আপাতত নতুন সিটি করপোরেশন করার পরিকল্পনা নেই বলেও জানান মন্ত্রী।