Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাড়িতে ফিরেও ‘নজরদারি’তে উহান ফেরতরা


১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:২০

ফাইল ফটো

ঢাকা: এরই মধ্যে আশকোনার হজ ক্যাম্পে স্থাপন করা কোয়ারেনটাইন ইউনিট থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে চীনের উহান থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের। তাদের কারও শরীরেই মধ্যেই করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) লক্ষণ বা উপসর্গ না মিললেও জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে এই ৩১২ জনকে আরও ১০ দিন চলাফেরা সীমিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই ১০ দিন উহান ফেরত এসব বাংলাদেশিকে নিজ নিজ এলাকার সিভিল সার্জন এবং জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা হচ্ছে। আর তাদের শরীরে কোনো ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে আইইডিসিআরকে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআরে করোনাভাইরাস নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

আরও পড়ুন- উহান ফেরত বাংলাদেশিদের বাড়ি ফেরা শুরু

তিনি বলেন, কোয়ারেনটাইনে থাকা কারও শরীরে করোনাভাইরাস নেই— এমন ছাড়পত্র দেওয়ার পর সবাই বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে অতিরিক্ত সতকর্তা হিসেবে তাদের সবাইকে কন্ডিশনাল রিলিজ দেওয়া হয়েছে। এই সময়টুকু তারা আমাদের নজরদারিতে থাকবেন। যে যে জেলায় অবস্থান করবেন, সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও জেলায় সিভিল সার্জনের অফিস থেকে বিষয়টি মনিটর করা হবে। এছাড়া যাদের বাড়ি উপজেলা পর্যায়ে, তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মনিটর করা হবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের শরীরে কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে আইইডিসিআরকে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে। এই সময়ে তারা যেন জনসমাগম এড়িয়ে চলেন এবং খুব বেশি প্রয়োজন না হলে তারা যেন বাড়িতেই অবস্থান করেন— এমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাড়ির বাইরে গেলেও মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে তাদের।

১৪ দিন কোয়ারেনটাইনের আওতায় থাকার পরও কেন ১০ দিন বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, আইইডিসিআর সবকিছুই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী করছে। এর মধ্যে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি’র একটি গবেষণাপত্রে এ ধরনের ব্যক্তিদের ২৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার কথা উঠে এসেছে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবেই এই ২৪ দিনের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

আইইডিসিআর পরিচালক জানান, উহান ফেরত যারা ছিলেন তাদের সবার ফোন নম্বর, ঠিকানাসহ সব তথ্য রেখে দিয়েছে আইইডিসিআর। তারা যে যেখানেই থাকুন, স্থানীয় সিভিল সার্জন বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হবে। আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগের সব নম্বরও তাদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসময় কোয়ারেনটাইন কার্যক্রম পরিচালনায় যুক্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

এখন পর্যন্ত দেশে কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক। তিনি জানান, দেশে এখন পর্যন্ত ৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। সিঙ্গাপুরে পাঁচ বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন আইসিইউতে আছেন। বাকি চার জন আইসোলেশনে আছেন। যিনি আইসিইউতে আছেন, তার অবস্থা অপরিবর্তিত।

চীন থেকে আরও বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি অন্যদের আনার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে করোনাভাইরাস চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে দেশটির ‍হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে গত পহেলা ফেব্রুয়ারি ফিরিয়ে আনা হয় ৩১২ বাংলাদেশিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের অংশ হিসেবে তাদের ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেনটাইন করে রাখা হয় রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে। ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ শেষে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের সবাই বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর শনিবার রাতেই আশকোনার হজ ক্যাম্প থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন সিংহভাগ উহান ফেরত বাংলাদেশি। বাকিরা আজ রোববার সকালে নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন।

ফাইল ছবি

৩১২ বাংলাদেশি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আইইডিসিআর উহান ফেরত বাংলাদেশি কভিড-১৯ করোনাভাইরাস নজরদারি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর