রফতানিতে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা মধু: কৃষিমন্ত্রী
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৪৮
ঢাকা: দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এখন দেশের বাইরে মধু রফতানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মধু রফতানিকে ভবিষ্যতের রফতানি বাজারের একটি সম্ভাবনাময় খাত বলেও মনে করছেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মধু রফতানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জাপানে এখন আমাদের মধু রফতানি হচ্ছে। এ বছর চারশ মেট্রিক টন মধুর অর্ডার পাওয়া গেছে। এটা আমাদের জন্য খুশির খবর। আমাদের যারা মধু উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত, তারা অনেক নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন মধু উৎপাদন করছে। এছাড়াও বিদেশি অনেক প্রযুক্তির মাধ্যমে মধু উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়রি) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) চত্বরে তিন দিনব্যাপী জাতীয় মৌ মেলা ২০২০-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মেলা উপলক্ষে বিএআরসি অডিটোরিয়ামে ‘পুষ্টি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মৌচাষ’ বিষয়ক সেমিনারে অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষির আধুনিকায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণে মধু একটি নতুন সংযোজন। এটি আমাদের রফতানি বহুমুখীকরণে সহযোগিতা করবে। আগে মধু সীমিত আকারে উৎপাদন হলেও এখন বাণিজ্যিকভিত্তিতে মধু উৎপাদন শুরু হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দানাদার খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আলুতে আমরা উদ্বৃত্ত রয়েছি। এরকম অনেক ফসলেই আমরা উদ্বৃত্ত রয়েছি। কৃষি পণ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত ও মূল্য সংযোজন করে— এমন পণ্য করতে হবে, যেগুলোর বাজারমূল্য অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে মধু বিদেশে রফতানি করার সম্ভাবনা আছে। যদি আমরা গ্যারান্টি দিতে পারি, আমাদের মধুর মধ্যে দোষণীয় কিছু নেই, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং আধুনিক উপায়ে এটা উৎপাদন করা হয়েছে, তাহলে বিদেশে রফতানি করা যাবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনি অঙ্গীকার ছিল পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে মধু একটি অন্যন্য খাদ্য। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে মৌমাছি পালন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। মৌ চাষ সম্প্রসারণ পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান করে থাকে।
কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবিল করে ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে রফতানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে মুজিববর্ষকে সমৃদ্ধির বছরে রূপান্তরিত করা হবে বলে বক্তব্যে আশাবাদ জানান কৃষিমন্ত্রী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ও বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইংয়ের সাবেক পরিচালক ড. সৈয়দ নূরুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএইর হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক মো. কবির হোসেন।
এর আগে, মেলা উপলক্ষে বিকেলে এক সচেনতামূলক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মৌ চাষের বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে অংশ নেয় কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থাগুলো।
চতুর্থবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এবারের মেলায় সরকারি ছয়টি ও বেসরকারি ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৭৪টি স্টল স্থান পেয়েছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। মেলা চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
কৃষিমন্ত্রী কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জাতীয় মৌ মেলা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মধু