স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ড. অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নিজেই অপারেশনটি দেখেছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের (এবিটি) সমন্বয়ক মেজর (বরখাস্ত) জিয়াউল।
রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে জিয়াউল সরাসরি সম্পৃক্ত। ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি গ্রেফতার না হলেও বিচারকার্যক্রম পরিচালনা করার মতো তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন। কয়েকমাস আগেও তিনি দেশে ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে সক্রিয় না থাকায় তিনি কোথায় আছেন এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। আমাদের বিশ্বাস তিনি দেশে থাকলে কিংবা সক্রিয় থাকলে আমাদের ইন্টেলিজেন্স তাকে খুঁজে বের করতে পারত।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলাটি শুরু থেকে ডিবি তদন্ত করত। তিন মাস আগে কাউন্টার টেররিজম তদন্তের দায়িত্ব নেয়। এর আগে ডিবি, র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। কাউন্টার টেররিজম গ্রেফতার করেছে তিনজনকে।’
মুকুল রানা নামের একজন ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। সিটির হাতে গ্রেফতার তিন জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী ডিবি ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া সাতজনের মধ্যে তিনজনের এই মামলায় কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
‘এছাড়াও তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী আনসার আল ইসলামের প্রধান মেজর জিয়াউলসহ পাঁচজনকে খুঁজছি আমরা। এই পাঁচ জনের মধ্যে ২-৩ জনকে ধরতে পারলে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে। আমরা খুব দ্রুত তদন্তকাজ শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী’ বলেন মনিরুল।
কাউন্টার টেররিজমের প্রধান বলেন, ‘মামলার বিচারকাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। শনাক্ত হওয়া বাকি পাঁচজনের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করা না গেলেও বেশিদিন আর মামলাটি ধরে রাখব না, শীঘ্রই চার্জশিট দিয়ে দেব।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিজিৎকে খুন করার পেছনে কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল না। মূলত তার লেখালেখির কারণেই এবিটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিজিৎকে খুন করা হয়। যেহেতু অভিজিৎ বিদেশে ছিলেন, তাই সে কবে দেশে আসবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করে এবং তাদের ইন্টেলিজেন্স উইং থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। পরে সার্ভিলেন্স উইং তাকে খুনের পরিকল্পনা করে। আর অভিজিৎকে অন্য জায়গায় খুন করার সিদ্ধান্ত থাকলেও সুযোগের অভাবে বই মেলাতেই ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন চালায় তারা। এ অপারেশনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায়, ঘটনার সময় আনসার আল ইসলামের সমন্বয়ক মেজর জিয়াউলসহ শীর্ষ নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।’
সারাবাংলা/এসআর/আইএ/একে