Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোরের ঘরে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর’ পিস্তল


২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:২১

ঢাকাঃ চোর ধরতে গিয়ে চোরের ঘর থেকে ৭ দশমিক ৬ বোরের একটি বিদেশি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি পেয়েছে পুলিশ। ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, পিস্তলটি সাধারণত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। তার কাছে এ পিস্তল কোথা থেকে এলো সেটা খতিয়ে দয়া হচ্ছে। এছাড়া ওই চোরের ঘর থেকে চুরির এত পরিমাণ মালামাল উদ্ধার করেছে যে, পুলিশ তা দেখে তাজ্জব হয়ে গেছে। গ্রেফতার হওয়া চোরের নাম মোহাম্মদ সোহান।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

ডিসি বলেন, ‘গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোর ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন মানিকদি এলাকার আমিনুল ইসলামের বাসায় দরজার তালা ভেঙ্গে চুরি করে। তার বাসা থেকে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের বালা, দুটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, তিনটি স্বর্ণের গলার চেইন, দুটি গলার হার, তিন জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৮টি স্বর্ণের আঙটি, যার ওজন ১০ ভরি চুরি হয়। এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হয়। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সোহানের যোগসাজস পায় পুলিশ।’

সুদীপ কুমার বলেন, “গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহান জানায়, সে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিয়মিত ‘ক্রাইম পেট্রোল’দেখে চুরির কাজে লিপ্ত হয়েছে। সেখান থেকে চুরির আধুনিক কলা কৌশল শিখেছে বলে তার ভাষ্য। সে দিনের বেলায় চুরি করা বেছে নিতো। প্রথমে দারোয়ানের গতিবিধি লক্ষ্য করে সুযোগ মতো বাসায় প্রবেশ করতো। বাসায় দরজায় তালা থাকলে তা খোলার জন্য বিশেষ যন্ত্র রয়েছে তার কাছে। পরে ভেতরে প্রবেশ করে চুরি শেষে সে বেরিয়ে যেতো। তবে যেসব বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো নেই ওইসব বাসাকে মূলত টার্গেট করতো চোর সোহান।”

সোহানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মালামালের মধ্যে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি, ৩০০ গ্রাম গাঁজা, নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, তিনটি চাকু, একটি খুর, ২টি স্ক্রু ড্রাইভার, লোহার তৈরি ৬টি র্যাথ, ২টি রেঞ্চ, ৫টি ঘড়ি, চাবি ২২টি, তিনটি মানিব্যাগ, টর্চ লাইট, স্বর্ণালঙ্কার, ইমিটেশেন ও বেশ কয়েকটি হাতলযুক্ত ব্যাগ রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘তার কাছ থেকে যে বিদেশি পিস্তল পাওয়া গেছে সেটা মূলত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া অন্য কারো এই অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ নেই। এই অস্ত্র সে কোথায় পেয়েছে তা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।’

তিনি আরো বলেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সে জানিয়েছে, এক লোকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিদেশি পিস্তলটি কিনেছে। কেনার পর সে এখনো ওই পিস্তলটি ব্যবহার বা প্রদর্শন করেনি বলে দাবি করেছে। জানিয়েছে। তবে তার কথা আমরা খতিয়ে দেখছি। এছাড়া অস্ত্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কে বা কোন সংস্থা ব্যবহার করতো তা জানতে সকলকে ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে। অথবা কারো খোয়া গিয়ে থাকলে কেউ যোগাযোগ করে কিনা তাও জানা যাবে। এর্ বাইরে পিস্তলটি কেউ ভাড়া দিয়েছে কিনা অথবা অন্য কেউ সরবরাহ করেছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

গুলশানের ডিসি বলেন, ‘বাসা বাড়িতে এখন সহজেই সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে মোবাইল ফোনে তা পর্যবেক্ষণ করা যায়। তাই সকলের উচিত নিজের বাসাকে নিরাপদ রাখার জন্য ব্যবস্থা নেয়া। পুলিশের দায়িত্বও রয়েছে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। পুলিশ সবসময় অ্যালার্ট আছে। বাকিটা সহযোগিতা করলে সব চোরকে পাকড়াও করা সম্ভব হবে।’

 চোর সোহানের নামে এর আগেও পল্লবী থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর শাহবাগ থানা থেকে একজন এএসআইয়ের বিদেশি পিস্তল খোয়া যায়। চোরের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি সেটি কিনা জানতে চাইলে সুদীপ কুমার বলেন, ‘এটি ডিএমপির কোনো অস্ত্র নয়। অস্ত্রাগারে সিরিয়াল মেলানো হয়েছে। এটি ঢাকার বাইরের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কারও অস্ত্র হবে। আসলে এটি কার সেটিও বের হবে বলে আশা করছি।’

অস্ত্র চোর ডিএমপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর