Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গোপালগঞ্জের ৫ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শেষ


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:২১

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার পাঁচ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর দাখিল করা হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক, এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলামসহ তদন্ত সংস্থার সদস্যরা।

পাচ ব্যক্তি হলেন-গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার বাসিন্দা মোতাহার উদ্দিন সিকদার (৬৫), ইনায়েত হোসেন মিয়া ওরফে মোল্লা (৬৫), নিজামুল হক মিয়া ওরফে লুৎফর রহমান ওরফে লুথু মোল্লা (৬৮), তদন্তের স্বার্থের বাকি দুই জনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও লাশগুমসহ চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে একজন গ্রেফতার আছে। বাকি চার আসামি এখনো গ্রেফতার হয়নি। আসামিরা গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার বাসিন্দা। আসামিরা সবাই একাত্তর সালে মুসলীম লীগের সমর্থক ছিলেন। বতর্মানে অধিকাংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক বলেও জানানো হয়েছে।

৪টি ভলিয়মে ৩৯৭ পৃষ্টার প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হচ্ছে

অভিযোগ-১: ১৯৭১ সালের ২৮ জুন আনুমানিক সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী রাজাকার বাহিনী সদস্য আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকার মো. ইনায়েত হোসেন মিয়া নিজামুল হকসহ ১২/১৩ জন সশস্ত্র রাজাকার দল নৌকাযোগে সাবেক মহকুমা ও বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থানার ছোট বাহিরবাগ গ্রামের আউয়াল হক মিয়ার বাড়ীর পাশে ঘাটে নামে। নেমেই এলোপাথারি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় আওয়াল মিয়ার জামাতা মুক্তিযোদ্ধা মাসুমের খোঁজ করে। তাকে না পেয়ে আওয়াল হক মিয়া ও তার ছেলে সিরাজ মিয়াকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক আটক ও অপহরণ করে নৌকায় তুলে আর্মিদের কাছে নিয়ে যায়। পরে জামাতা মাসুমকে হাজির করার শর্তে আওয়াল হককে ছেড়ে দেয়। আর সিরাজ মিয়া আর্মিদের সহায়তায় গোপালগঞ্জে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কোনো একসময় হত্যা করে লাশ গুম করে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ-২: একাত্তর সালের ৩ জুলাই কাশিয়ানি থানার ওরাকান্দি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী আব্দুস ছালাম মিয়াকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক আটক ও অপহরণ করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সদস্যদের কাছে হাজির করে। রাজাকার আব্দুল মান্না মিয়া, ইনায়েত হোসেন, নিজামুল হকের সহায়তায় আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে আব্দুস ছালামকে হত্যা করে লাশ গুম করে।

অভিযোগ-৩: ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকার ইনায়েত হোসেন মিয়া, নিজামুল হকের একটি সশস্ত্র রাজাকার দল গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার সিতারামপুর গ্রামে যায়। সেখানে ৯টি বাড়ীতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ওই গ্রাম ও আশপাশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল কাদের মোল্লা, মকবুল হোসেন, মো. রওশন আলী মোল্লা, আনোয়ার মীর ও আজাহার শেখদের ধরে নিয়ে যায়। আর্মিদের সহায়তায় রাজাকাররা কাদের মোল্লাকে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এবং মকবুল হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে।

অভিযোগ-৪: ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর বেলার ১১টার দিকে রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার নেতৃত্বে এই রাজাকাররা ও পাকিস্তানী বাহিনীর সশস্ত্র দল নিয়ে কাশিয়ানি থানার রামদিয়া বাজারে যায়। সেখানে স্বাধীনতার স্বপক্ষীয় লোকজনদের অন্তত ৫০/৬০টি দোকান লুটপাট করে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর প্রিন্সিপাল আয়ুবুর রহমানের বাড়ীতে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে।

গোপালগঞ্জ মানবতাবিরোধী অপরাধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর