Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আবারও উল্টোপথে পুঁজিবাজার


২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:২৩

ঢাকা: আবারও উল্টোপথে হাঁটছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। বুধবার দিনশেষেও টানা পঞ্চম দিনে গড়ালো দুই পুঁজিবাজারের দরপতন। ইতোপূর্বে পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা কাজে আসছে না। বরং পূর্বের ন্যয় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের খবরে তাৎক্ষণিকভাবে পুঁজিবাজার দুএক দিনের জন্য ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের নানা পদক্ষেপের ঘোষণার খবরে গত ১৯ জানুয়ারি ও ১৬ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে রেকর্ড পরিমাণ উত্থান হয়। কিন্তু এই উত্থান দুতিনদিনের বেশি ধরে রাখা যায়নি। আবারও শুরু হয়েছে টানা দরপতন।

এদিকে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) টানা পঞ্চমদিনের মতো সূচকের পতন দিয়ে শেষ হয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজারের লেনদেন।

সবশেষ পাঁচ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক হারিয়েছে ২০৯ পয়েন্ট। একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশের আর্থিক খাতের সার্বিক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। বিশেষ করে ব্যাংক ও ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাত অনিয়ম, দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণে বিপর‌্যস্থ অবস্থায় পড়েছে। এই অবস্থায় পুঁজিবাজারের জন্য সরকার থেকে নানা পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হলেও বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে সরকারের কোনো উদ্যোগের খবরে পুঁজিবাজার তাৎক্ষনিকভাবে দুএক দিনের জন্য ঘুরে দাঁড়ালেও তা ধরে রাখা হচ্ছে। মূলত পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট রয়েছে।

বুধবার ডিএসইতে ৩৫৬টি কোম্পানির ২৫ কোটি ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪১টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ২২৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টির দাম।

দিনশেষে ডিএসইতে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ দাড়ায় ৬২৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৭২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫৪৯ পয়েন্টে নেমে আসে। এছাড়া এদিন ডিএসই শরিয়া সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬০ পয়েন্ট, ডিএসইএ-৩০ সূচক ৩৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে নেমে আসে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে রোববার অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৫০টি কোম্পানির ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬২ হাজার ৫৪২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮১টির, কমেছে ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনশেষে সিএসইতে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ২০৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে উন্নীত হয়।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর, অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। এসব উদ্যোগের মধ্যে ছিল, ১৫ ফেব্রুয়ারি এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ১৭০ কোটি ডলার ঋণ সুবিধা, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ২০০ কোটি টাকার তহবিল সরবরাহের ঘোষণা এবং অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রায়ত্ব চার ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়া খবর অন্যতম।

পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে গত ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের নীতি নির্ধারকদের নির্দেশ দেন। এইসব ঘোষণা তাৎক্ষনিকভাবে পুঁজিবাজার দুএক দিনের জন্য পতন থামলেও তা ধরে রাখা যাচ্ছে না।

দরপতন পুঁজি বাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর