অমর একুশে বইমেলায় এখন বেলা শেষের গান। আর মাত্র তিন দিন বাকি। নতুন বই এসেছে চার হাজার দুশরও বেশি। স্টলে স্টলে তালিকা ধরে পাঠক বই কিনছেন।
বই বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বললেন, ‘আগামী বরাবরই সিরিয়াস সাহিত্য মেলায় নিয়ে আসে। হুমায়ূন আজাদের সব বই-ই ভালো বিক্রি হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বইও পাঠক আগ্রহ নিয়ে কিনছেন। গেল বছরের চেয়ে বিক্রি ভালোই।’
প্রায় প্রতিটি স্টলেই পাঠকের ভিড় কম-বেশি ছিল ২৫তম দিনের বইমেলায়। অবসর, প্রথমা, ঐতিহ্য, সময়, অন্যপ্রকাশের মতো প্যাভিলিয়ন তো বটেই, ভিড় ছিল চৈতন্য, দেশ, বাতিঘরেও।
জার্নিম্যান বুকস থেকে এদিন প্রকাশিত হয়েছে জাদু শিল্পী জুয়েল আইচের ‘জীবন জয়ের জাদু’ বইটি। জার্নিম্যান প্যাভিলিয়নেই অনাড়ম্বর আয়োজনে একইসঙ্গে মোড়ক উন্মোচন হয়েছে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামের ‘বজ্র ড্রাগনের দেশে সিকি শতাব্দী আগে’ বইয়ের।
বই এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জাফ্রিনা তুশিনের। ছোটদের জন্য তুশিন লিখেছে ‘ছড়ায় ছড়ায় প্রাণী চেনা’। প্রাণী আর পরিবেশের প্রতি শিশু মনে ভালাবোসা জন্মাতেই তুশিনের বইটি।
২৫তম দিনে মেলায় নতুন বই এলো ১৫৬টি। ২৫ দিনে এলো মোট চার হাজার ২৩৯টি।
এর মধ্যে পাঠক সমাবেশ এনেছে আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘বৃষ্টির ভেতরে রবী’। একরঙা এক ঘুড়ি প্রকাশন এনেছে নীলসাধুর ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জাপান ভ্রমণের শতবর্ষ পর নীলসাধু জাপান পৌঁছালেন’।
মূল মঞ্চে আলোচনার বিষয় ছিল বাংলা একাডেমি প্রকাশিত কামরুল হকের ‘বঙ্গবন্ধু ও সংবাদপত্র: ছয় দফা থেকে গণঅভ্যুত্থান’। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোহরাব হাসান। সভাপতিত্বে ছিলেন কামাল লোহানী।
সোহরাওয়ার্দী প্রান্তের ইউপিএল আর প্রথমা প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নের মধ্যে ছোট্ট লনে সন্ধ্যায় লাগানো হয়েছিল একটি ব্যানার। তাতে একাপাশে হুমায়ূন আজাদ, আরেক পাশে অভিজিৎ রায়ের ছবি। মাঝে লেখা ‘তোমাদের মৃত্যু আমাদের করেছে অতন্দ্র, তোমাদের রক্তচিহ্ন হয়ে উঠেছে আমাদের কালের তীর্থ’।
নিস্তরঙ্গ সেই ব্যানারই বলে দিচ্ছিল, ২০১৫ সালের বইমেলা থেকে ফেরার পথে হত্যা করা হয়েছিল বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে। অমর একুশে বইমেলায় অভিজিৎ স্মরণে কোনো আয়োজন নেই। শুধু ব্যানারটিই যেন একমাত্র প্রতিবাদ হিসেবে যেন ঝুলছিল সন্ধ্যার বইমেলায়।
আরও পড়ুন-