‘অনলাইনে তালিম’ নিয়েই জঙ্গিবাদে ‘তারা’
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৫৮
ঢাকা: আশুলিয়া ও ধামরাই থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা জেলে বসে আর অনলাইনে তালিম নিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হোসেন। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
আটক ৫ জঙ্গি হলো- অলিউল ইসলাম ওরফে আব্দুল্লাহ (২৩), মো. মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ ওরফে আল্লাহর গোলাম (২০), মো. সবুজ হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ এবাজ উদ্দিন (২৬), মো. আরিফুল হক ওরফে আরিফ ওরফে হৃদয়, রাশিদা ওরফে হুমায়রা (৩৩)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এর সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত ডিআইজি।
এদের মধ্যে অলিউল ইসলাম ওরফে আব্দুল্লাহ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তিনি এইচএসসি পাশ করে কিছুদিন স্থানীয় মসজিদে আরবি শিক্ষা নেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য হিসাবে রাষ্টবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার কারণে ২০১৯ সালে আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় জেলখানায় থাকার সময় দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের সংস্পর্শে যান এবং তাদের কাজ থেকে জঙ্গি সংক্রান্ত কার্যক্রমে আরও নির্দেশনা নিয়ে অধিক দক্ষতা অর্জন করেন। ফেসবুক ছাড়াও তিনি বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম চালু রাখেন। তিনি একটি উগ্রবাদী চ্যানেলের অ্যাডমিন হিসাবে কার্যক্রম চালিয়ে যান এবং সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করেন।
আবার নারী সদস্য রাশিদা ওরফে হুমায়রা একটি মাদরাসা থেকে ৮ম শ্রেণি পাস করেছেন। ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও ৩ বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তিনি ২০১৪ সালে দুবাই যান এবং দুবাই থেকে এসে ২০১৭ সালে কাতার যান। কাতার থাকা অবস্থায় অনলাইনে ‘আল্লাহর গোলাম’ নামে ফেসবুক আইডির সঙ্গে পরিচয় হয়, যার পেছনে ছিলেন মো. মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ। কাতার অবস্থানকালে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং কার্যক্রমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নারী সদস্য সংগ্রহ ও সংগঠিত করাসহ সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করা শুরু করেন।
অন্য ৩ জনও বিভিন্নজনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আসামিরা কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতাকারীদের ওপর আক্রমন করে, কঠোর শাস্তি বা টার্গেট কিলিংও করে থাকে। নিয়মিত তারা সদস্যদের কাছ থেকে মেহেনতের মাধ্যমে ইয়ানত সংগ্রহ করেন। এই দলের সদস্যরা বিভিন্ন প্রটেক্টিভ অ্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন গোপন গ্রুপ তৈরি করে উগ্রবাদী সংবাদ, বই, উগ্রবাদী ব্লগ, উৎসাহমূলক ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে নিয়মিত নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতো।’