বড় অবকাঠামোর উন্নয়নে বন্ড প্রবর্তনের আহ্বান ডিসিসিআই-এর
২ মার্চ ২০২০ ২০:৫৯
ঢাকা: দেশের বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নে বন্ড প্রবর্তনের আহবান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সোমবার (২ মার্চ) পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কার্যালয়ে তার সাথে সাক্ষাৎকালে ডিসিসিআই নেতারা এ আহবান জানান বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ডিসিসিআই।
তাদের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে মংলা বন্দরের সক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছে।’ এছাড়া দেশের উদ্যোক্তাদের এ বন্দর আরও বেশি হারে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার গৃহীত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তবে নির্ধারিত সময়ে মানসম্মত এডিপি বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের কৌশলপত্র প্রদানের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী পিপিপির আওতায় সরকার গৃহীত অবকাঠামো প্রকল্পসমূহে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার উপর জোরারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি লন্ডনের পুঁজিবাজারে বাংলা বন্ড চালু হয়েছে, যা দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মাঝে আসার সঞ্চার করেছে এবং এ নিয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার গৃহীত বড় ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পসমূহের অর্থায়নে বন্ড অনেক কার্যকর অবদান রাখবে।’
ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।’ তিনি জানান, গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার হাব রিপোর্ট-এর হিসাব মতে, ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবকাঠামো বিশেষ করে সড়ক জল ও রেলপথ, বন্দর, জ্বালানী, টেলিকম খাতের উন্নয়ন প্রায় ৬০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা প্রয়োজন এবং এ ধরনের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর অর্থায়নে সরকারকে অধিকাংশক্ষেত্রেই সরকারি কোষাগারসহ ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হয়, যার ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপর চাপ পড়ে। এ অবস্থা উত্তরণে বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নে ডিসিসিআই বন্ড ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব করেন, যার ফলে বড় অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন আরও সহজতর হবে।
এছাড়া তিনি ব্লু ইকোনোমির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য এ খাতে গবেষণা প্রণয়ন ও বিনিয়োগের জন্য ‘ব্লু বন্ড’ চালুর প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মানসম্মত ও সময়মত বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে ‘ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রকাচার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং অ্যাডভাইজরি অথরিটি (নিডমা)‘ নামে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধাভোগ করতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানব সম্পদের দক্ষতা বাড়ানো এবং শিল্পখাতে নতুন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার ও কর্মসংস্থানের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আসন্ন অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতে বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ডিসিসিআই শিল্পোন্নয়নে সহায়ক গবেষণা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত এবং ত্বরান্বিত করতে ‘রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন বাংলাদেশ’ (আরএনআই বাংলাদেশ) নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ও সক্রিয় সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএ, এফসিএস, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশিরউদ্দিন, পরিচালক ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, নূহের লতিফ খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, আরমান হক, মো. জিয়া উদ্দিন, এস এম জিল্লুর রহমান, দীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, মনোয়ার হোসেন এবং মো. সাহিদ হোসেনসহ অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।