মোংলা: মোংলা বন্দরে সিঙ্গাপুর থেকে আসা একটি বিদেশি জাহাজের ৩ ফিলিপিনো নাবিকের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে এমন একটি খবর বৃহস্পতিবার ( ৫ মার্চ) সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে শহর জুড়ে।
তবে খবর নিয়ে জানা যায় ‘বুধবার রাতে চট্টগ্রাম হয়ে ২৪ হাজার মেট্টিক টন কয়লা নিয়ে মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি সেরেনি টাস-এন’ মোংলা বন্দরের হারবারিয়া এলাকার আলফা-৩ এ নোঙ্গর করে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটিতে করোনা সনাক্ত মেডিকেল টিম প্রবেশ করে। এসময় মেডিকেল টিম ৩ ফিলিপিনো নাবিকের শরীরে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রির উপরে সনাক্ত করে। এটিকে করোনার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে সনাক্ত করা হলে পুরো জাহাজে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ইউনিক মেরিটাইম লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন ‘বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় মেডিকেল টিম ওই জাহাজে প্রবেশ করে। তারা ওই তিন ফিলিপিনোর মধ্যে দুজনের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় দেখতে পায়।
তিনি মেডিকেল টিমের বরাত দিয়ে আরও বলেন, করোনায় আক্রান্ত সন্দেহভাজন বিদেশি ৩ নাবিকের গায়ের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ছাড়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অন্য কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি। অথচ পুরো মোংলায় মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে।
মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফকর উদ্দিন জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সিঙ্গাপুর থেকে আসা ওই বিদেশি জাহাজের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী ‘এম ভি সেরেনি টাস-এন’ জাহাজের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বুধবার ২৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে ‘এম ভি সেরেনি টাস-এন’ জাহাজ। ওই জাহাজের তিন জন নাবিক হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হলে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে তাদের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি বলে জানান বন্দরের ওই পদস্থ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সে ক্ষেত্রে ওই জাহাজ থেকে সব শ্রমিক নামিয়ে এনে আমরা জাহাজের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে জাহাজের কাজ আবার শুর হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পোর্ট হেলথ কর্মকর্তা ডা. সুফিয়া খাতুন বলেন, মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী ‘এম ভি সেরেনি টাস-এন’ জাহাজের ৩ জন ফিলিপিনো জ্বরে আক্রান্ত হলে আমরা তাদের পরীক্ষা করি। এসময় তাদের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়নি। এদের মধ্যে আবার দু’জনের জ্বর ভাল হয়ে গেছে এবং একজনের শরীরে ৯৯ দশমিক ৭৭ ডিগ্রি জ্বর রয়েছে, যা খুবই স্বাভাবিক।
ডা. সুফিয়া আরও বলেন, এই একজনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ওই জাহাজে ২০ জন বিদেশি নাবিক রয়েছেন।
এদিকে, জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ ব্যাপারে বলেন, মোংলা বন্দরে একটি জাহাজের তিন জন যাত্রীর মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ রয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে তাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে জাহাজটি গভীর সমুদ্রে রাখা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে তথ্য জানানো হবে।
