Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইনই একেকটি কোটেশন’


৭ মার্চ ২০২০ ১৭:৫৮

ঢাকা: ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে সময়োপযোগী ঘোষণাটিই দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ভাষণের প্রতিটি লাইনই আলাদা আলাদা অর্থ নিয়ে উদ্ধৃতিযোগ্য বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলেছেন। আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করব না। আমি শুধু বলব,  অনেকে উচ্চারণ করেছেন। আমি শুধু বলব— ৭ মার্চের ভাষণের একেকটি লাইনই একেকটি কোটেশন। আর সেই লাইনগুলো ছিল সেই সময়ের জন্য প্রযোজ্য। সময়ের প্রয়োজনে জাতির সামনে যা কিছু বলার প্রয়োজন ছিল, বঙ্গবন্ধু সেদিন তা বলে গেছেন তার ভাষণে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (ওই সময় রেসকোর্স ময়দান) এক বিশাল সমাবেশের সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

ঐতিহাসিক সেই ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের পটভূমি হয়তো অনেকে জানেন। ওই সময় অনেকে অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। অনেক জ্ঞানী-গুণীজন লিখিত আকারে ভাষণ তৈরি করে দিয়েছিলেন। আমাদের ছাত্রনেতারা, তাদের অনেকেই পরে আর আমাদের সঙ্গে থাকেনি, তারা বলেছিলেন— এখনই স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হবে, নইলে জাতি হতাশ হবে। কিন্তু জাতির পিতা জানতেন, কখন কোন পদক্ষেপটি নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সেদিন সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি ছিল প্রকারান্তরে মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তৈরি হওয়ারই নির্দেশনা। কেন এমন কৌশলী ঘোষণা দিতে হলো বঙ্গবন্ধুকে? সে প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তখনকার যে অবস্থা, অনেক খবরই আমরা আমরা জাতির পিতার পরিবারের সদস্য হিসেবে পেতাম, যা বাইরের মানুষের জানার কথা। ওই সময় পাকিস্তানিরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল। তাদের যুদ্ধ বিমান রেডি ছিল, হেলিকপ্টার রেডি ছিল। ৭ মার্চের ভাষণে তিনি কী বলবেন, সে অনুযায়ী অ্যাকশন প্ল্যান রেডি ছিল পাকিস্তানিদের। ব্রিটিশ আমলে যেমন জালিয়ানওয়ালাবাগে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আন্দোলন স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, ঠিক ওই রকম প্রস্তুতিও ছিল। তাই জাতির পিতাকে কৌশলী হতে হয়েছে।

‘মুজিববর্ষের মধ্যেই সব গৃহহীন ঘর পাবে’

 

এ প্রসঙ্গে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবেরও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু কী বলবেন, তা নিয়ে যখন অনেক আলোচনা, সেই ক্রান্তিলগ্নে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন আমার মা। বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে আমার মাকে দেখেছি, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটি তিনি নিতে পারতেন। আগরতলা মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি নেওয়ার জন্য পাকিস্তানিদের সঙ্গে সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদেরও চাপ তৈরি হচ্ছিল, আমার বলেছিলেন— মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। প্যারোলে নয়, মুক্ত মানুষ হিসেবে তুমি যাবে। ৭ মার্চের ভাষণের সময়ও মা বলেছিলেন— তুমি সারাটা জীবন মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছে। তুমিই সবচেয়ে ভালো জানো, কী বলতে হবে। তোমার মনে যা আছে, তাই বলো। বঙ্গবন্ধু সেই কথাই বলে গেছেন।

বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন সেই ভাষণে— খুব অল্প কথায় সেই সারসংক্ষেপও তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ভাষণের শুরুটা তিনি যেভাবে করেছিলেন, ‘ভাইয়েরা আমার।’ যেন তিনি এই জাতিকে আপন করে নিয়েছিলেন। সেই ডাকই তিনি দিয়েছিলেন সবার প্রতি। ভাষণে তিনি তুলে ধরেছেন বাঙালি জাতির বঞ্চনার ইতিহাস, বারবার ভাগ্য নিয়ে খেলার ইতিহাস। জনগণ ভোট দিয়েছে, কিন্তু ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জাতির জনক সে বঞ্চনার ইতিহাস বর্ণনা করেছেন, অত্যাচার-নির্যাতনের কথা তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, ওই সময় কী করণীয়, সেই দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটি জাতি— তার সামনে কোনো আশা নেই, ভরসা নেই, স্বপ্ন নেই। সেই জাতিকে বঙ্গবন্ধু আশার বাণী শুনিয়েছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুল মান্নান, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনাসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল মোস্তফা, আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মে মান্নাফী, আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।

সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

৭ মার্চের ভাষণ আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর