Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সৌহার্দ্যের বার্তা দিয়ে রেজাউল-শাহাদাতের প্রচারণা শুরু


৯ মার্চ ২০২০ ১৭:২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: একই স্থান থেকে প্রায় একই সময়ে ভোটের প্রচারণা শুরু করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির শাহাদাত হোসেন। প্রচারণা শুরুর আগে রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দুই প্রার্থী আলিঙ্গন করেন।

সোমবার (৯ মার্চ) দুপুরে রেজাউল ও শাহাদাত নগরীর জেল রোডে আমানত শাহ’র মাজার জেয়ারত করেন। প্রথমে শাহাদাত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাজারে যান। জেয়ারত শেষে বেরিয়ে আসার সময় রেজাউল নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢুকছিলেন। মুখোমুখি হওয়ার পর একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং স্লোগান দেন। নৌকা ও ধানের শীষের পাল্টাপাল্টি স্লোগানে মুখর হন নেতাকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

প্রচারণা শুরুর পর প্রথমদিনে মাজার থেকে বেরিয়ে রেজাউল গাড়িতে করে নগরীর উত্তর পাহাড়তলী এলাকায় যান। উত্তর পাহাড়তলী, বাগমনিরাম ও লালখান বাজার এলাকায় রেজাউল গণসংযোগ করছেন। এসময় নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম এ রশিদ, অর্থ সম্পাদক সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালামসহ নেতাকর্মীরা ছিলেন।

গণসংযোগ শুরুর আগে রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শতভাগ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা চালানো হবে। আমরা ডোর টু ডোর যাবো। চট্টগ্রামের উন্নয়নে নেয়া প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরবো। নান্দনিক-সুন্দর এবং সন্ত্রাস-মাদক ও জঞ্জাল মুক্ত চট্টগ্রাম গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়ে তেলার যে স্বপ্ন তা জনগণকে বলব।’

অন্যদিকে শাহাদাত নেতাকর্মীদের নিয়ে হেঁটে গণসংযোগ শুরু করেন। মাজার থেকে বেরিয়ে লালদিঘীর পাড়, কোতোয়ালী, নিউমার্কেট হয়ে তিনি নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগোতে থাকেন। গণসংযোগে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটে। এসময় শাহাদাতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করসহ নেতাকর্মীরা ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

গণসংযোগ শুরুর আগে শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের ২০ লক্ষ ভোটারকে আমি ভোটকেন্দ্রে স্বাগত জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- এই গণতান্ত্রিক অধিকার, এই ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে আসেন এবং ধানের শীষে ভোট দেন। আমি রাজনৈতিক মতভিন্নতার উর্দ্ধে উঠে চট্টগ্রামকে একটা আধুনিক, নান্দনিক, স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়তে চাই। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন ভোটারদের সমর্থন।’

‘আশা করি, ভোটারেরা তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আমাকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ মিথ্যা মামলায় বিনা কারণে কারাগারে বন্দি আছেন। ভোটারেরা যেন রায় দিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে সহযোগিতা করেন। ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছি। সাধারণ জনগণের কাছে অনুরোধ, তারা যেন ধানের শীষে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ইনশল্লাহ জয় আমাদের হবে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে আমরা দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করব।’

এর আগে সোমবার নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে দিনভর চলে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনের প্রতীক বরাদ্দ কার্যক্রম। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের উপস্থিতিতে প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। মিলনায়তনে রেজাউল ও শাহাদাত পাশাপাশি বসেন। রেজাউলকে নৌকা এবং শাহাদাতকে ধানের শীষসহ মেয়র প্রার্থীদের তাদের দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চট্টগ্রামে কিছু সমস্যা আছে জলাবদ্ধতা, পরিবেশ, রাস্তাঘাট, বর্জ্য অপসারণের সমস্যা সেগুলো নিরসনেই কাজ করবো। জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে জননেত্রীর দেওয়া প্রকল্প চলমান আছে। কাজ শেষ করতে পারলে সুফল মিলবে।’

প্রচারণায় করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেজাউল বলেন, ‘সর্তকতা অবলম্বন করা হবে। জনগণকে বলব সচেতন থাকতে।’

শাহাদাত তার নির্বাচনি প্রচারণার বিষয়ে বলেন, ‘এত অল্প সময়ে চট্টগ্রাম শহরের সব মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে চাই। ৪৩টি ওয়ার্ড, প্রায় ২০ লাখ লোক ১৫ দিনে যাওয়া খুব অবাস্তব। আমাদের তাই মিনি ট্রাক থাকবে, ট্রাকে করে প্রচারণা চালাবো। এতে ক্লোজ কন্টাক্ট কম হবে, প্রচারণাও চলবে, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকেও দূরে থাকা যাবে।’

করোনাভাইরাসের বিষয়ে শাহাদাত বলেন, ‘করোনা যেহেতু বাংলাদেশে চিহ্নিত হয়েছে এটা আমাদের প্রচারণার একটা অংশ হওয়া উচিত। জনগণ যেন আতঙ্কিত না হয়। কেউ করোনার আক্রান্তদের বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে সাথে সাথে সরকারি সংস্থা কে জানানো উচিত। আমরা মানুষকে সচেতন করবো, যাতে কেউ আতঙ্কিত না হয়।’

এম রেজাউল করিম চৌধুরী নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং শাহাদাত হোসেন নগর বিএনপির সভাপতি পদে আছেন।

চট্টগ্রাম নির্বাচন রেজাউল শাহাদাৎ সিটি

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর