তবু নির্বাচন পেছাবেন না সিইসি
১৬ মার্চ ২০২০ ১৯:২৪
ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানও। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জনসমাগম না করার কথাও বলা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাও এই ভাইরাসের কারণে নিজের শঙ্কার কথা প্রকাশ করছেন। তারপরও নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।
সিইসি বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত। তারপরও এই নির্বাচনে আমরা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। আগামী ২১ মার্চ ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছি না। এর মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। আল্লাহর রহমতে সব ঠিক হয়ে যাবে, হয়তো।’ এসময় যারা নির্বাচনে কাজ করবেন তাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি এসব কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব মো. আলমগীর এবং ডিএমপি’র কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সিইসি, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পাঁচ আসনের উপ-নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রচারণা কাজে জনসভা, পথসভা পরিহার করে বিকল্প প্রচারমাধ্যম বেছে নেওয়া অনুরোধ জানিয়েছেন।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) সকল ধরণের জনসমাগম না করার নির্দেশনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার এখনই বিষয়টি টেক আপ করবো।মেসেজটা যেন পৌঁছে দিতে পারে, সেজন্য ব্যবস্থা নেবো।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন বন্ধ করিনি এখনো।যতক্ষণ বন্ধ করিনি, ততক্ষণ হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা একটি এমন একটা জাতি যাদের ন্যাচারাল টলারেন্স রয়েছে। হাজার বছরের অভ্যাস প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে।জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, মহামারী, কলেরা, বসন্ত, ম্যালেরিয়া মোকাবিলা করা হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনটা পেছাতে চাচ্ছি না। নির্বাচনে সময় এজেন্টরা যদি কেন্দ্রে যায়, তার নিরাপত্তা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অনেক সময় দেখি, যে এজেন্ট যেতে দেওয়া হয়নি বলা হয়।কিন্তু আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি তারা যায়নি। তাই যারা প্রার্থী তাদের অনুরোধ করবো-সক্ষম , দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন এজেন্ট নিয়োগ দেবেন। তারা যেন ফাঁকি না দেন।তারা যেন ভোটকেন্দ্রে যান। এজেন্ট কেন্দ্রে না গেলে তাদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে এজেন্ট একটা নির্ভযোগ্য ব্যক্তি, কোনো অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করবেন, আমাদের বলবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এজেন্টদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
উল্লেখ্য, আগামী ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচন।ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন নৌকা প্রতীকে এবং বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন শেখ রবিউল আলম।
এর আগে, গত ২৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকার এবং গত ১০ জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সাংসদ ডা. মোজাম্মেল হোসেন মারা গেলে আসন দুইটি শূন্য হয়। অন্যদিকে মেয়র নির্বাচনে অংশ নিতে গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ করলে এই আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে।গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ মার্চ উল্লেখিত তিন আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।