মুজিববর্ষের উদ্বোধনীতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষ উদযাপনের উদ্বোধন হচ্ছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে।

মুজিববর্ষ উদযাপন ডামাঢোলের প্রাক্কালে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে মুজিববর্ষের ঘোষিত কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। গত ৮ মার্চ সরকার এবং জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি জনস্বার্থে ও জনকল্যাণে ১৭ মার্চের পূর্ব ঘোষিত অনুষ্ঠান জনসামাগম এড়িয়ে চলার লক্ষ্যে পুনর্বিন্যাস করেছে। আমন্ত্রিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিদেশি অতিথিদের সফরও স্থগিত করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে। ১০ জানুয়ারি বিকাল ৫টা ১৭মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানে লোগো উন্মোচন ও ক্ষণগণনা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও প্রধান সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুজিববর্ষের লোগো তুলে দেন। লোগো উন্মোচনের পর প্রধানমন্ত্রী সুইচ টিপে ক্ষণগণনার উদ্বোধন করেন, যা সারাদেশে একযোগে চালু হয়। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

মুজিববর্ষ উদযাপন শুরুর প্রতীক্ষার অবসান হলো ১৭ মার্চ। সোমবার (১৬ মার্চ) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। অনুরূপ কর্মসূচি সারাদেশে পালন।

এছাড়াও সকাল দশটায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি দল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেবেন।

টুঙ্গিপাড়ার এ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দিপু মণি, ড. হাছান মাহমুদ এমপি, আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শ্রী মুকুল বোস, সাংগঠনিক সম্পাদক এস. এম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।

সারাদেশে জাতির পিতার জন্মদিনে দোয়া মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দেশব্যাপী সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। সকাল ৮টায় তেজগাঁও গির্জায়, সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ (৩/৭-এ সেনপাড়া, পবর্তা, মিরপুর-১০)-এ খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।

এছাড়াও এদিনে এতিম ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হবে। দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আজিমপুর এতিমখানায় অসহায়, দুঃস্থ ও এতিমদের মাঝে খাবার, বস্ত্র ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহার্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে। দুপুর ১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বনানীর করাইল বস্তিতে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এতিম ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হবে। এছাড়াও বাদ আসর রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করবে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।

জাতির পিতার জন্মক্ষণ ১৭ মার্চ রাত আটটায় সারাদেশে একযোগে আতশবাজি প্রদর্শনী ও ফানুস উত্তোলন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ধানমন্ডি-৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর, হাতিরঝিল, সোরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি ও জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় আতশবাজি প্রদর্শনী। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। রাত ৮টার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় ও বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে একযোগে সকল গণমাধ্যমে প্রচারিত অনুষ্ঠান দেখানো হবে।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ রাত আটটায় দিকে অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গে তথা বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জাতির পিতা। অপরদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ ৫০বছর পূর্তি হচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের আন্দোলনে অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন তিনি। বাঙালি জাতির ইতিহাসে অবদানের কথা স্মরণ করে বর্ষটিকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগ কর্মসূচি টপ নিউজ মুজিববর্ষ