জরুরি অবস্থা ঘোষণা চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন
১৯ মার্চ ২০২০ ১৩:৫১
ঢাকা: সংবিধানের ১৪১ এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন সুপ্রমকোর্টের তিন আইনজীবী।
আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার সঙ্গে রয়েছেন আইনজীবী আসাদ উদ্দিন ও জুবায়দুর রহমান।
আবেদনে বলা হয়, মরণব্যাধী করোনাভাইরাসের কারনে এরই মধ্যে বিশ্বের সাতটি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
দিন দিন করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংবিধানের ১৪১ এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারীর কারণ। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষাধিক মানুষ এবং আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজার মৃত্যুবরণ করেছেন। এটি অতিমাত্রায় সংক্রামক ভাইরাস।
এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ব। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, স্পেন, কানাডা ও বেলজিয়াম জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সকল দেশ মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশেও এই সংক্রামক ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত নয়। এ পর্যন্ত ১৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং আক্রান্তদের মধ্যে থেকে একজন মৃত্যুবরণ করেছে। হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারেনটাইনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে এবং সকল খেলাধুলা স্থগিত করেছে।
রিপোর্ট আসছে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিটস এর সংখ্যা মাত্র ১৭৩২। এই ১৮ কোটি জনগোষ্ঠীর জন্য শনাক্তকারী কিট এর এই সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। সরকার বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেনটাইনে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মেনে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রিপোর্ট আসছে নিয়ম না মানার কারণে এই ভাইরাস এখন কমিউনিটিতে সংক্রমিত হচ্ছে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্থানীয় লোকজন বিদেশ ফেরত লোকদের বাড়িঘর ঘেরাও করছে।
বিদেশ ফেরত ৩০ জন বিচারক এবং চার জন ডাক্তারকে হোম কোয়ারেনটাইনে পাঠিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সভা, সমাবেশ ও মাহফিল অব্যাহত আছে। করোনা আতঙ্ক কাজে লাগিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফলে বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশ ও জাতি একটি আভ্যন্তরিন শৃঙ্খলাহীনতা এবং সংকটের দিকে ধাবিত হতে চলেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, বিদেশি ক্রেতারা পোশাক খাতের ক্রয় আদেশ বাতিল করছে এবং অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের হিউম্যান বায়ো সিকিউরিটি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চরম হুমকির সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে দেশ ও জাতি আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি পরবর্তী ঘোষণার মাধ্যমে ১৪১ক(২)(ক)-এর অধীনে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা যেতে পারে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।