Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেনটাইনে ৫,১৫৮ জন, ১০ দিনে ১৪,২৬৪


২১ মার্চ ২০২০ ০১:৩০

ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) ৫ হাজার ১৫৮ জন বিদেশ ফেরত যাত্রীকে কোয়ারেনটাইনে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গত ১০ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনে কোয়ারেনটাইনে পাঠানোর হয়েছে ১৪ হাজার ২৬৪ জনকে। দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিদের তথ্য ও সিভিল সার্জনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৬৭ জন বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। এর পরেই আছে ঢাকা বিভাগের স্থান। এই বিভাগে ১ হাজার ১৪৪ জন আছেন হোম কোয়ারেনটাইনে। এছাড়া এই সময়ে ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৮৭ জন, রংপুর বিভাগে ৩৭৪ জন, খুলনা বিভাগে ৮৫৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৬২ জন ও সিলেট বিভাগে ৩৩২ জন হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন।

বিজ্ঞাপন

বিদেশ ফেরতদের শনাক্তে হাতে দেওয়া হচ্ছে সিল

এছাড়া ১০ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে দেখা যায়, সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৯৪ জন বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেনটাইনে আছে চট্টগ্রাম বিভাগে। ঢাকা বিভাগে হোম কোয়ারেনটাইনে আছে ৩ হাজার ৮৮৬ জন। এরপরেই আছে খুলনা বিভাগের স্থান। এই বিভাগে হোম কোয়ারেনটাইনে আছে দুই হাজার ৮৪ জন। এছাড়া এই সময়ে ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ৪৮৯ জন, রংপুর বিভাগে ৬২৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৬১৩ জন ও সিলেট বিভাগে ১ হাজার ২১৫ জন হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন।

বাংলাদেশে এই ১০ দিনে কোয়ারেনটাইন শেষ করেছে ১ হাজার ৮৬৩ জন।

বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই ২০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন একজন। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছে এক জন। উনার বয়স ৭০ বছর।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২০ মার্চ) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।

এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের (কোনো এলাকায় ব্যাপক হারে সংক্রমন ছড়িয়ে পড়া) ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। লোকাল ট্রান্সমিশনের (পরিবারের সদস্যদের মাঝে) মাধ্যমেই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হোম কোয়ারেনটাইনের যৌক্তিকতা নিয়ে আছে অনেকের মনেই আছে নানা শঙ্কা। ইতোমধ্যেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ছড়িয়ে পড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, সে দিকে আমরা নজর রাখছি। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে এটা ঠিক। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সে শঙ্কা নেই। কারণ আমরা পরিস্থিতি মনিটরিং করছি। ইতোমধ্যেই মাদারীপুরের শিবচরকে লকডাউন করা হয়েছে যাতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এড়ানো যায়।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকতে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। একইঙ্গে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাকে নিজের ও পরিবারের স্বার্থেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত লোকাল ট্রান্সমিশন হয়েছে। অর্থাৎ পরিবারের বাইরে এখন পর্যন্ত কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে হোম কোয়ারেনটাইনই আসলে কার্যকর পন্থা। আশা করছি সবাই হোম কোয়ারেনটাইনে থেকে সকল নিয়ম মেনে চলবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনে আছে ৪৪ জন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আক্রান্ত এলাকা থেকে কাউকে দেশে ফিরে না আসার জন্য অনুরোধ জানালেও দেখা যায় প্রায় প্রতিদিনই দেশে আসছে প্রবাসীরা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

করোনা কোয়ারেনটাইন প্রবাসী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর