করোনাভাইরাস আপডেট: বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছুঁই ছুঁই
২১ মার্চ ২০২০ ২১:৪২
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রতিদিনই কয়েক হাজার হারে বাড়ছে। শনিবার (২১ মার্চ) পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৮৭ হাজারেরো বেশি। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে এগারো হাজার ৮৯৭ জনের। মৃতের সংখ্যায় ইতালি সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এর পরপরই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে চীনে। করোনাভাইরাসের সবশেষ তথ্য প্রকাশ করছে এমন ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডমিটার ডট ইনফো থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, এসব সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
গত বছরের ডিসেম্বরের চীনের হুবই প্রদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়। এ বছরের শুরু থেকেই ওই প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকে। পরে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। এ পর্যন্ত দেড়শোরও বেশি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল খুদ চীনে ব্যাপক প্রাণহানির পর আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন কমছে। চীনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৮ জন। এতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ২৫৫ জনের। সেরে উঠেছেন ৭১ হাজার ৭৪০ জন। তবে বিপরীত চিত্র বিশ্বের অন্যান্য দেশে।
চীনের পর এ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ইতালিতে। সেদেশে এ পর্যন্ত চার হাজার ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার একদিনেই মারা গেছেন ৬২৭ জন। যা এ ভাইরাসটির প্রকোপ শুরুর পর কোন একটি দেশে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা। করোনাভাইরাসে ইতালিতে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার ২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন দুই হাজার ৬৫৫ জন। শনিবারের তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ইউরোপে ইতালির পর সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে স্পেনে। সেদেশে এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন এক হাজার ৩২৬ জন। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। এর মধ্যে ২১ হাজার ২৫ জন আক্রান্ত হয়েও পুরোপুরি সেরে ওঠেছেন।
জার্মানিতে ব্যাপক আক্রান্তের ঘটনা ঘটলেও ইতালি ও স্পেনের তুলনায় মৃত্যুর হার অনেকটাই কম। সেদেশে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৪৮৩ জন। দেশটিতে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
এদিকে ইরানি করোনাভাইরাসের কারণে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সেদেশে প্রতিদিন ব্যাপক হারে বাড়ছে এ সংখ্যা। এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ইরানে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৬১০ জন।
এদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬১২ জন। দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গিয়েছে ৪৫০ জনের। ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।
তবে বিপরীত চিত্র সুইজারল্যান্ডে। সেদেশে আক্রান্তের সংখ্যা উর্ধ্বমুখি। সুইজারল্যান্ডে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ১৮৬ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে । যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ১৯ হাজার ৮২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সেদেশে এ পর্যন্ত ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলো পৃথক করোনা ইউনিট চালু করার জন্য ১০০ কোটি ডলারের তহবিলের জন্য আবেদন জানিয়েছে হাসপাতালগুলো।
যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৭২ জন। কোভিড-১৯ রোগে ভুগে সেদেশে মৃত্যু হয়েছে ১৭৭ জনের।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে চীনের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা এসবের দেশের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৯৯ জন। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১০২ জনের। এছাড়া জাপানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছুঁয়েছে। সেদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫ জন। ভিয়েতনামে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ জন। কোভিড-১৯ দেশটিতে কোন মৃত্যুর ঘটনা এখনও ঘটেনি।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যা করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া
তবে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই ব্যাপকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। নেদারল্যান্ডসে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৩১। সেদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ১৩৬ জন। সুইডেনে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৪। সেদেশে মৃতের সংখ্যা ২০ জন। ডেনমার্কে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৩২৬ জন। সেদেশে মৃতের সংখ্যা ১৩ জন। পর্তুগালে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৮০ জন। সেদেশে মৃতের সংখ্যা ১২ জন।
এছাড়া বেলজিয়ামে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৮১৫ জন ও মৃতের সংখ্যা ৬৭ জন। কানাডায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৭ জন। সেদেশে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০৭২ ও মৃতের সংখ্যা ৭ জন। ইসরায়েলে আক্রান্তের ৮৮৩ ও মৃতের সংখ্যা ১ জন।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব শনিবার সকাল থেকে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ পর্যন্ত সেদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯২ জন। কাতারে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭০ জন। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশ দুটিতে এ পর্যন্ত কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে রাশিয়া করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সফলতা দেখিয়েছে। সেদেশে এ পর্যন্ত ৩০৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন ও মৃত্যু হয়েছে একজনের। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৩ ও মৃতের সংখ্যা পাঁচজন। এছাড়া পাকিস্তানে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৬ জন ও মৃতের সংখ্যা তিন।
শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।