সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বাস মালিকরা, রেল নিয়ে বৈঠক রোববার
২১ মার্চ ২০২০ ১৯:৩৯
ঢাকা: করোনো আতঙ্কে সারাদেশে সড়কপথে যাত্রী অনেকটাই কমে গেছে। চলাচল সীমিত হয়েছে আন্তঃজেলা রুটে। রাজধানীতে যাত্রী না থাকায় বাসও তেমন বের হয়নি। পরিবহন মালিক সমিতি অপেক্ষা করছে সরকারের সিদ্ধান্তের। বাস যোগাযোগ বন্ধ করা বা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত এলেই মালিকরা তা কার্যকর করবেন।
এদিকে ট্রেনের যাত্রী কমে এলেও সারাদেশে রেলযোগাযোগ এখন স্বাভাবিক রয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করবে বলে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে রেল চলাচল নিয়ে রোববার (২২ মার্চ) মন্ত্রীর সঙ্গে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (২১ মার্চ) সারাদেশে যান চলাচল সীমিত দেখা গেছে। আর শুক্রবার (২০ মার্চ) থেকে রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ ছিল বন্ধ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সারাবাংলাকে জানান, রাজশাহীর স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবহন মালিক সমিতি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। সেখানে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সারাদেশে বাস যোগাযোগ বন্ধ রাখার সরকারি কোনো নির্দেশনা এখনও আসেনি।
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘সারাদেশেই যাত্রী সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। দূরপাল্লার রুটে কোনো কোনো বাস মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। আর সারাদেশের হিসেব করলে নিয়মিত সময়ের চেয়ে যাত্রী সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ ভাগে নেমে এসেছে।’
রাজধানীতে যাত্রী না থাকায় বাস মালিকরা বাস ছাড়ছেন না বলেও জানান ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্যাহ। এছাড়া তার মালিকানাধীন পরিবহনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার টিস্যু যাত্রীদের দিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ সারাবাংলাকে জানান, তার মালিকানাধীন শ্যামলী পরিবহন রাজশাহী ছাড়া দেশের অন্যান্য গন্তব্যে চলছে। তবে যেসব পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে যাচ্ছে না। তবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে ট্রিপ এখন বেশ কমেছে।
এই পরিবহন নেতা মনে করেন, ‘করোনা সতর্কতার জন্য এখনই সারাদেশে পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হবে। যারা এ কয়েকদিন বাইরে বেরিয়েছেন তাদের হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা উচিত। যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক, এমনকি মালিক কেউই এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ নয়।’
এদিকে রেলওয়ে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান সারাবাংলাকে জানান, ট্রেন চলাচল বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা সরকার থেকে এখনও আসেনি। রোববার রেলপথ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে। তখন যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয় সেটা জানানো হবে। এ পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক আছে। সিডিউল অনুযায়ী ট্রেন চলাচল করছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রেলওয়ের দুটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ঢাকার কমলাপুর এবং অন্যটি চট্টগ্রামে রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। রেলওয়ে পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮টি হাসপাতাল ভবন ও ১৬টি ডিসপেনসারি প্রয়োজনে প্রস্তুত করা হবে। এরই মধ্যে এগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হয়েছে।
কমলাপুরসহ দেশের বড় বড় রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এছাড়া যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ও মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।