Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেড়শ কোটি ডলারের পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত


২২ মার্চ ২০২০ ২৩:৩০

ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাবে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৮৯টি পোশাক কারখানার বিভিন্ন পরিমাণে অর্ডার স্থগিত বা বাতিল হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১৫০ কোটি ডলারের পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ পরিস্থিতিতে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধের উপক্রম হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (২২ মার্চ) রাতে এক ভিডিও বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘ভয়াবহ অবস্থা চলছে আমাদের। বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন মহাদেশ থেকে সব ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ আপাতত বালিত বা স্থগিত করছে। বলছে স্থগিত, কিন্তু আমাদের জন্য স্থগিত করা কিংবা বাতিল করা একই কথা। কাজেই সবকিছু মিলিয়ে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯টি কারখানা আমাদের ওয়েব পোর্টালে এন্ট্রি করেছে। এর মধ্যে ৮৭ কোটি ৩২ লাখ ৬৬ হাজার ৬২২টি পোশাক কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এর আর্থিক মূল্য ১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার (১৪৮ কোটি ডলার)। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের উত্তরে রুবানা হক সারাবাংলাকে বলেন, ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করতে আমরা একটি ওয়েব পোর্টাল করেছি। সেখানে প্রায় ৪ হাজার কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৮৯টি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এন্ট্রি দিয়েছে। এটা বাড়তে বাড়তে কোন অবস্থায় যায়, আমরা এখন সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি। এ পরিস্থিতি দেশের পোশাক খাতের জন্যে খুবই উদ্বেগের।

এর আগে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোববার বিকালে সংগঠনটির এক নেতা জানিয়েছিলেন, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৪৭টি কারখানার ৯২৭ মিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্যের অর্ডার স্থগিত হয়েছে। এর মধ্যে ওয়েবসাইটে ১৮৪টি কারখানার ৫৬১ মিলিয়ন ডলার ও ইমেইলে ১৬৩টি কারখানার ৩৬৫ মিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ স্থগিতের তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজিএমইএ নেতারা জানিয়েছেন, বিশ্বের স্বনামধন্য প্রায় সব বায়ারই ক্রয়াদেশ বাতিল করছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, তৈরি পোশাক খাতের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ ও আমেরিকা। সেখানে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানকার ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল কিংবা স্থগিত করতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ইউরোপ-আমেরিকায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে না এলে ক্রয়াদেশ বাতিলের পরিমাণ বাড়বে।

তারা আরও বলছেন, একদিকে ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন করে ক্রয়াদেশও আসছে না। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে রফতানি বাণিজ্যের অন্যতম এই খাতটি। এই অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে থাকলে অনেক কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন দেয়াও সম্ভব হবে না। তা হলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

এর আগে, চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই পোশাক ব্যবসায়ীরা বলছিলেন, তারা ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন। চীন থেকে তৈরি পোশাকের কাঁচামাল দেরিতে আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে কোনো কোনো কারখানার উৎপাদন। পরে ইউরোপে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে পোশাক সরবরাহ নিয়েও শঙ্কা দেখা দেয়। সব শঙ্কাই এখন বাস্তবতার সম্মুখীন।

পোশাক মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক পোশাক কারখানাই বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কিছু কারখানা বন্ধও হয়েছে। তবে সরকার, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের বড় একটি অংশ এখনই কারখানা বন্ধের পক্ষে নয়। অন্য একটি পক্ষ অবশ্য শ্রমিকের সুরক্ষায় গার্মেন্টস বন্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

কারখানা খোলা রাখার পক্ষে মত জানিয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু সারাবাংলাকে বলেন, আমরা গার্মেন্টস চালু রাখার পক্ষে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।  আমরা মনে করি, কারখানা বন্ধ করে দিলেই সমাধান হবে না। বরং বন্ধ করে দিলে তা আরও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন সারাবাংলাকে বলেন, আমরা গার্মেন্টস বন্ধের পক্ষে নই। আমরা চাই প্রতিটি কারখানায় সুরক্ষা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা হোক। গার্মেন্টস বন্ধ না করে শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে

তবে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি পোশাক কারখানা বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কারখানা বন্ধের পক্ষে।

অর্ডার বাতিল করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ ক্রয়াদেশ বাতিল ক্রয়াদেশ স্থগিত পোশাক কারখানা

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর