স্বজনদের সান্নিধ্যে খালেদার স্বস্তির কোয়ারেনটাইন!
২৮ মার্চ ২০২০ ২০:১৫
ঢাকা: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা সংকটের মধ্যে সাময়িক মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মুক্তির সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই পরামর্শ মেনে গুলশানের নিজ বাসা ফিরোজায় ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ আছেন তিনি।
তবে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকলেও স্যোসাল এবং অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে নিকট আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। দেশের বাইরে থাকা ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনীদের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলছেন তিনি। ঢাকায় থাকা ভাই-বোন, তাদের ছেলে মেয়ের সান্নিধ্যও পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। সঙ্গত কারণেই শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই চাঙ্গা অনুভব করছেন বিএনপি নেত্রী। তিনি আছেন স্বস্তির কোয়ারেন্টাইনে— সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এমনটিই জানাচ্ছে।
পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফলমূল ছাড়া বাইরের কোনো খাবার খালেদা জিয়া খাচ্ছেন না। যেটুকু খাবার তিনি গ্রহণ করছেন, তা ‘ফিরোজায়’-ই রান্না হচ্ছে। নিয়মিত শেফই তার রান্না করছেন। শুক্রবার (২৭ মার্চ) বোনের বাসা থেকে এসেছিল পছন্দের খাবার। খালেদা জিয়া কখন কী খাবেন— তা দেখভাল করছেন বোন সেলিমা ইসলাম।
রান্নার কাজটা বাদে খালেদা জিয়ার গৃহকর্ম পুরোটাই করছেন সেই ফাতেমা বেগম; যিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন। কোয়ারেনটাইনের দিনগুলোতে ডাক্তার ছাড়া বাইরের লোক বাড়ির ভেতরে প্রবেশ নিষেধ থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন না তিনি। সিনিয়র নেতারা খোঁজ রাখছেন মুঠোফোনে।
বোন সেলিমা ইসলাম জানিয়েছেন, বাসায় আসার পর থেকেই তিনি অনেক হাসি-খুশি। দলীয় কোনো কথা তোলেননি এখনও। তাকে ফ্রেশও লাগছে। দুই বছর পর পরিবারের সবাইকে পেয়ে অনেক খুশি তিনি। বাসায় ফেরার প্রথম রাতে সবার সঙ্গে খেয়েছেন। ঘুমিয়েছেন ১০টা বাজতেই। ভোরে উঠে নামাজ আদায় করছেন। প্রাত্যহিক জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে তার।
পারিবারিক সূত্রমতে, লন্ডনে অবস্থানরত পূত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় ডাক্তাররা তার দেখভাল করবেন। চিকিৎসার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে তারা জোবাইদার পরামর্শ নেবেন।
চিকিৎসা বোর্ডের চিকিৎসকরা নিয়মিত চেকআপ করছেন। এরই মধ্যে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএফ সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন ও ডা. মামুন তাকে দেখে গেছেন। জোবাইদা রহমানের সঙ্গে কথা বলে নতুন প্রেসক্রিপশন করেছেন তারা। হোম কোয়ারেনটাইন শেষ হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে নতুন চিকিৎসা শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ম্যাডাম এখন কোয়ারেনটাইনে আছেন। এখন প্রধান কাজ হলো তাকে একা থাকতে দেওয়া। তারপরও আমরা সেদিন গিয়ে দেখে এসেছি। আগের ওষুধগুলোই চলছে। কোয়ারানটাইন শেষ হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নতুন ওষুধ শুরু করা হবে। এখন উনি আগের চেয়ে ভালো আছেন।’
শনিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ‘ফিরোজায়’ ঢুকেছেন তার খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য।