হলি ফ্যামিলিতে হচ্ছে ডায়ালাইসিস সেন্টার
৩১ মার্চ ২০২০ ০৮:২০
ঢাকা: কিডনি রোগে আক্রান্ত অসহায় রোগীদের স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা দিতে রাজধানীর হলিফ্যামিলি হাসপাতালে স্থাপন করা ডায়ালাইসিস সেন্টার। এজন্য ‘হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, গত ২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। গত ১০ মার্চ ওই সভার কার্যবিবরণী জারি করে পরিকল্পনা কমিশন। কার্যবিবরণী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মোট ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ‘হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন’ নামের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির সরকারি অবদান ৫৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং প্রত্যাশী সংস্থার অবদান ৪২ দশমিক ২৬ শতাংশ।
সভায় জানানো হয়, কিডনি রোগে আক্রান্ত অসহায় রোগীদের স্বল্প খরচে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া, কিডনি রোগীর সংখ্যা সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসা এবং এ রোগে আক্রান্তদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের আগে পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালটি অনেক পুরাতন এবং চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে আরও কী কী কার্যক্রম নেওয়া হবে সে সস্পর্কে সভায় সংস্থার প্রতিনিধি জানান, কিডনি চিকিৎসায় ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য প্রকল্পের আওতায় ৬০টি ডায়ালাইসিস মেশিন ও বেড স্থাপন করা হবে, যার মাধ্যমে সপ্তাহে কমপক্ষে ৫৪০ জন রোগীকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি কিডনি রোগীদের স্বল্পমূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও মত প্রকাশ করা হয়।
প্রস্তাবিত নির্মাণ কাজ বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে জানানো হয়, প্রকল্পে তিন তলা ফাউন্ডেশনের ভবন নির্মাণ কাজের দ্বিতীয় তলার কাজ শেষের পথে। এ অবস্থায় এই প্রকল্পে সম্পাদিত কাজ সংযোজন করার কোনো সুযোগ নেই বলে আলোচনা হয়। এ জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে এই স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনে গণপূর্ত অধিদফতরের রেট সিডিউল অনুযায়ী ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের সুপারিশ প্রণয়ণ এবং সে অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় প্রাক্কলন করে ডিপিপিতে সংযোজন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া সাব-স্টেশন, জেনারেটর ও লিফট প্রয়োজন অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয়ের প্রাক্কলনে সংযুক্ত করা যেতে পারে বলে সভায় মত দেওয়া হয়।
এছাড়া ডিপিপিতে প্রকল্প এলাকা এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য অনুযায়ী বেডের সংখ্যা ও সুবিধাভোগীর লক্ষ্যমাত্রা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে সভায় জানানো হয়। আর সমজাতীয় প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা দেখানো আবশ্যক বলেও সভায় মত প্রকাশ করা হয়। এর বাইরে প্রকল্প ব্যবস্থাপনাতে জনবল নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয়।
নীতিমালা অনুসারে ৩০ শতাংশ দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখসহ কর্মপরিকল্পনা ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন বলে সভায় মত দেওয়া হয়।