Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পোশাক খাতে সুখবর: ক্রয়াদেশ বহাল রাখছে ক্রেতারা


১ এপ্রিল ২০২০ ১৯:২০

ঢাকা: সুখবরের আভাসটা ছিল আগে থেকেই। সে আভাস সত্যি হলো। পোশাক খাতের বড় বড় ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছেন।  বিপরীতে এবার তারা ক্রয়াদেশগুলো বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শিপমেন্টের অপেক্ষায় থাকা পণ্য নেওয়ার বিষয়েও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। ক্রেতাদের এমন সিদ্ধান্তের ফলে করোনার প্রভাবে যে ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিলের কথা বলা হচ্ছিল, এখন সেই পরিমাণ কমে আসবে।

বিজ্ঞাপন

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বুধবার (১ এপ্রিল) এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বলেন, এইচঅ্যান্ডএম, ইন্ডিটেক্স, পিভিএইচ, টার্গেট ও কিয়াবির মতো ক্রেতারা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা তাদের ক্রয়াদেশ বহাল রাখার কথা জানিয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সিঅ্যান্ডএ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

আরও পড়ুন- পোশাক খাতে সুখবর আসছে আগামী সপ্তাহে

রুবানা হক আরও বলেন, কেউ কেউ স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাদার পিপিই দেওয়ার জন্য তাদের একদিনের বেতন ডোনেট করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা আশা করি, দীর্ঘদিন ধরে যারা আমাদের সঙ্গে আছেন, কঠিন এই দুঃসময়েও তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আমাদের সমর্থন দিতে তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আশা করি, অর্থ প্রদানে তাদের শর্তগুলো এই সময়ে শিথিল থাকবে।

এদিকে, সুইডেনের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তাদের অর্ডারগুলো বহাল রাখবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা যেসব তৈরি পোশাক কারখানাকে পণ্য ক্রয়ের অর্ডার দিয়েছিলাম, সেগুলো বাতিল হচ্ছে না। আমরা আমাদের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করব। অর্ডারগুলোর ডেলিভারি নেব।

গণমাধ্যমে দেওয়া ওই বিবৃতিতে এইচঅ্যান্ডএম কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেনি। তবে বাংলাদেশ থেকে সুইডিশ এই প্রতিষ্ঠান বেশ বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক কিনে থাকে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা অর্ডারের মধ্যে তাই বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে দেওয়া অর্ডার থাকাও স্বাভাবিক। ওই বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ‘আমরা যে দরে অর্ডার দিয়েছিলাম, সেই দর অনুযায়ীই বিক্রেতাদের মূল্য পরিশোধ করব।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, পোশাক ক্রেতা টম টেইলেরের পক্ষ থেকেও বুধবার (১ এপ্রিল)  বিজিএমইএ’কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কিছু কিছু ক্রয়াদেশ বহাল রাখার কথা জানিয়েছে। একইসঙ্গে তাদের একদিনের বেতন বিজিএমইএ’র ফান্ডে জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। আর বাতিল হয়ে যাওয়া ক্রয়াদেশগুলো ফিরে পেতে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক।

এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ’র পরিচালক রেজওয়ান সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বায়ারদের বলছি, তোমরা তোমাদের অর্ডার ক্যানসেল কোরো না। দেরিতে শিপমেন্ট নেওয়ার ব্যাপারটি অ্যালাউ করছি। সাধারণত ৬০ থেকে ৯০ দিন পর টাকা দেয়। আমরা বলেছি, প্রয়োজনে আরও একমাস পরে টাকা দাও। তবুও অর্ডার বহাল রাখো।’

রেজওয়ান সেলিম বলেন, ‘৩ বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় এক মাসের রফতানি উধাও হয়ে যাওয়া। ক্রয়াদেশ বহাল রাখতে যতটা ছাড় দেওয়া যায়, তার সর্বোচ্চটা আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। বুধবার (৩১ মার্চ) সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সংগঠনটি বলছে, ১ হাজার ৮২টি ফ্যাক্টরির ৯৩২ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন পিস অর্ডার স্থগিত বা বাতিল হয়েছে। এর আর্থিক পরিমাণ ২৯৫ কোটি ডলার। এসব কারখানাতে শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২১ লাখ।

এর আগে ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ার প্রথম দিকে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক জানিয়েছিলেন, পোশাক খাতে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন মহাদেশ থেকে ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত করছে। ফলে এই খাতটি স্মরণকালের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে।

এদিকে, পোশাক খাতের দুরবস্থায় রফতানিমুখী শিল্পে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে। এ অর্থ দিয়ে পোশাক মালিকরা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারবেন।

করোনাভাইরাস ক্রয়াদেশ বহাল ক্রয়াদেশ বাতিল টপ নিউজ তৈরি পোশাক খাত পোশাক খাতের ক্রেতা বিজিএমইএ রুবানা হক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর