Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ, তোপের মুখে তাবলিগ জামাত


২ এপ্রিল ২০২০ ১৩:১৯

ভারতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতির কারণে তোপের মুখে পড়েছে মুসলিমদের একাংশের সংগঠন তাবলিগ জামাত।

এর আগে, দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজ থেকে ২৪ জন কোভিড-১৯ আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয় এবং অসুস্থ ৩০০ জনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ওইসময় মসজিদে প্রায় দুই হাজার লোক সাতদিন ধরে অবস্থান করছিলেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) পর্যন্ত ভারতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। তার মধ্যে নিজামউদ্দিন মারকাজে অবস্থানরতদের মধ্যে ৩৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই হঠাৎ সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভারতে তাবলিগ জামাতকে দায়ি করছেন প্রশাসনিক দায়িত্বশীলসহ সাধারণ জনগণের অনেকেই।

এই তাবলিগ জামাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন বিবিসি হিন্দির জুবাইর আহমেদ, সারাবাংলার পাঠকদের জন্য সেই বিবরণের ভাবানুবাদ তুলে ধরা হলো –

তাবলিগ জামাতের জন্ম

দুনিয়াব্যাপী ‘সত্য’ ইসলামকে তুলে ধরার তাগিদ থেকে ১৯২৬ সালে ভারতের উত্তরে মেওয়াত অঞ্চলের ইসলামি চিন্তক মাওলানা মোহাম্মাদ ইলিয়াস কান্দলভি তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠা করেন।

ওই সময় অনেক মুসলিমই মনে করতেন ব্রিটিশরাজের অধীনে তাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কে জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে। তাই অবিভক্ত ভারতে এই সংগঠনটি জনপ্রিয় হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতভাগের পরও এই সংগঠনের জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র কমে না। এখনও পাকিস্তান ও বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত সমানভাবে জনপ্রিয়।

তাবলিগ জামাতের উদ্দেশ্য

তাবলিগ জামাতের সদস্যরা মনে করেন, এই জামাত একটি অরাজনৈতিক সম্মিলন। তাদের লক্ষ্য, কুরআনের শিক্ষা অনুসারে একটি ইসলামি সমাজ গড়ে তোলা।

বিজ্ঞাপন

তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস বলেছিলেন, মুসলিমদের এখন ‘ভালো’ মুসলিম হয়ে উঠতে হবে। সেখান থেকে ধারণা করা যায়, ইসলামের আদর্শিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এই সংগঠনটি।

তাবলিগ জামাতের সদস্যরা প্রতি বছর ৪০ দিন মেয়াদে (চিল্লা) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সফর করে থাকেন। ওইসময় তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনে জনে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন।

তাবলিগ জামাতের ব্যাপ্তি

তাবলিক জামাত বর্তমানে একটি বৈশ্বিক ধর্মীয় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। ৮০ দেশে তাদের কার্যক্রম রয়েছে। প্রত্যেকটি দেশে একটি মারকাজ (কেন্দ্র) থেকে এই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় মারকাজ ছিল ওই নিজামউদ্দিন মারকাজ। এর অভ্যন্তরে, মসজিদ ও ডরমিটোরিসহ প্রায় পাঁচ হাজার জন অবস্থান করতে পারেন।

নিজামউদ্দিন মারকাজের সর্বশেষ পরিস্থিতি

মার্চের ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক ৪০ দিন ব্যাপী কার্যক্রমে ২৫০ জন বিদেশীসহ মোট দুই হাজার মানুষ অবস্থান করছিলেন। ২৪ মার্চ ভারতব্যাপী লকডাউনের মুখে তাদের অনেকেই মসজিদ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মসজিদের ভেতরেই ছিলেন সহস্রাধিক। তাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২৪ জনকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ওই মসজিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩৮৯ জনকে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

 

আরও পড়ুন –

কোভিড-১৯: দিল্লির মসজিদ থেকে ২৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত

‘মুসলিমদের দোষারোপে কেবল অজুহাত লাগে’

 

কোভিড-১৯ তাবলিগ জামাত নভেল করোনাভাইরাস ভারত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর