Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনাভাইরাস: প্রবাসীদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার দাবি


৪ এপ্রিল ২০২০ ১৮:০৬

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনভাইরাসে আক্রান্ত অভিবাসীদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার দাবি জানিয়েছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। একইসঙ্গে বিদেশে কর্মহীন অভিবাসীদের পরিবারের জন্য বিনাসুদে ঋণ ও ক্ষেত্র বিশেষে অনুদানের জন্য তহবিল গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (৪ এপ্রিল) এক অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী এ দাবি জানান।
ব্রিফিংয়ে জরুরি ও দীর্ঘমেয়াদে করণীয় বিষয়ে তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘অভিবাসীরা আশা করছেন অভিবাসনের দেশগুলোতে করোনা ভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের অবদান তুলে ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক প্রকাশ করবে। রামরু প্রস্তাব করছে দেশে এবং বিদেশে যারা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আগামী ১২ এপ্রিল (রোববার) দেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা সকাল ৯টায় (যার যার সময়) এক মিনিট নীরবতা পালন করব।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে রফতানিমুখী শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি দেবার জন্য সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন প্রশংসনীয়। একইভাবে বিদেশে কর্মহীন অভিবাসীদের পরিবারের জন্য বিনাসুদে ঋণ ও ক্ষেত্র বিশেষে অনুদানের জন্য তহবিল গঠনের দাবী জানাচ্ছি।’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিদেশের মাটিতে ৬০ জন মারা গেছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘করোনা ভাইরাস বিস্তারের সময়টিতে বেশ কিছু অভিবাসী বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ফেরত আসা অভিবাসীরা কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম মানছেন না এই খবর প্রকাশিত হবার পর হতে রামরুর বিভিন্ন কর্ম এলাকায় গ্রামবাসীদের হাতে অভিবাসীরা নানা ধরণের নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। অভিবাসী পরিবারগুলোকে একঘরে করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের গ্রামে থাকতে দিতে চাইছে না। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায় কোথাও কোথাও অভিবাসীদের উপর আক্রমণ ও চাঁদাবাজি হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিতে গেলেও তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। রামরু উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে যে করোনা সংক্রমণের উৎস হিসেবে মূলত অভিবাসীদেরকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। অন্যান্য জনগোষ্ঠী যেমন- ব্যবসায়ী, ভ্রমণকারী, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত যাত্রীদের ব্যাপারে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। অনেক ক্ষেত্রে তারাও কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার ভেতরে সেভাবে আসেননি কিন্তু তা নিয়ে তেমন তোলপাড় হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

যারা বিদেশে অবস্থান করছে তাদের সুরক্ষা দাবি জানিয়ে বামরুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যে সব দেশ এখন পর্যন্ত অভিবাসী শ্রমিকদের বিনামূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং এর চিকিৎসার জন্য সুযোগ দেয়নি তাদের অবিলম্বে এই সুযোগ প্রদানের জন্য আহ্বান জানাতে হবে।’

অভিবাসীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বামরু বলছে, ‘অভিবাসী কর্মীরা দেশের সোনার সন্তান। সর্বাগ্রে প্রযোজন তাদের মর্যাদা সমুন্নত রেখে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজগুলো করা। এ দায়িত্ব সবার কর্তব্যরত পুলিশ, সেনাবাহিনী, সরকারী কর্মকর্তা, চিকিৎসক, গণমাধ্যম এবং এলাকাবাসীর। স্থানীয় পর্যায়ে অভিবাসীদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংস্থাসমূহের টেলিফোনের মাধ্যমে অভিবাসী পরিবারগুলোতে তাৎক্ষণিক চাহিদা নিরূপন করা প্রয়োজন। যে সব পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তাদের ইউনিয়ন, উপজেলা ও ডি সি অফিসের খাদ্য গ্রহীতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘যখন অর্থনৈতিক মন্দায় গন্তব্যদেশে প্রচলিত খাতগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকের চাহিদা কমে আসবার সব ইঙ্গিত রয়েছে, বাংলাদেশে ফেরত আসা অভিবাসী এবং চাকরিচ্যুতদের অনেকেই তখন বিদেশে চাকরি নেবার জন্য মরিয়া হবেন। রামরু আশংকা করছে যে এই সুযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ও পাচার চক্র সক্রিয় হবে। এ অবস্থা মোকাবিলায় এখন থেকেই সরকারকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একদিকে যেমন প্রশাসনকে দায়বদ্ধ হতে হবে ও অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সচেতনতা বাড়াতে হরে অন্যদিকে তেমন দেশের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও ফিরে আসা অভিবাসীদের দক্ষতার ব্যবহার ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিসহ আরও বেশ কিছু সুপারিশ রয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই

করোনা রামরু শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর