Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিদের নিয়ে চাপে সরকার


৫ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৩৮

ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড ১৯) আগ্রাসী আক্রমণে বিশ্বের প্রতিটি দেশই কঠিন সময় পার করছে। এমন পরিস্থিতিতে সবগুলো দেশই নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ চাইছে, এই মুহূর্তে তাদের দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে। যে কারণে একাধিক দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিয়ে চাপে রয়েছে সরকার। এরই মধ্যে মালদ্বীপ ও কুয়েতসহ একাধিক দেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরাতে বলেছে। শুধু তাই নয়, অনেক দেশ আবার বৈধভাবে থাকা প্রবাসীদেরও ফিরিয়ে আনার কথা তুলেছে।

বিজ্ঞাপন

এসব বিষয় কার্যকরভাবে সমাধান করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ রোববার (৫ এপ্রিল) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালেয় থেকে গণমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয় যে, কঠিন সময়ে এই চাপ খুব যত্নের সঙ্গে মোকাবিলা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করে যে, অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, সেই অবস্থান থেকে এই চাপ তেমন ঝামেলার সৃষ্টি করবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘বিদেশ থেকে কতজনকে ফেরত আনব, এটা কঠিন সিদ্ধান্ত। তাই প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আমরা সিদ্ধন্ত নিয়েছি যে, বুঝে শুনে বাস্তবতার নিরিখে কাজ করব। আমরা অন্যদেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি, তাদেরকেও চিঠিও দিচ্ছি। তাদের বলছি যে, এই কঠিন সময়ে তোমরাও অসুবিধায় আছো, আমরাও অসুবিধায় আছি। কিন্তু এর মধ্যেও মানবতার খাতিরে তোমরা এদেরকে (প্রবাসী বাংলাদেশি) সাহায্য করছ, আরও সাহায্য করো। তাহলে আমরা খুশি হব।’

‘কতগুলো দেশ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর কথা বলেছে?’- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘খুব বেশি দেশ না, কয়েকটি। ৪ থেকে ৫টি দেশ হবে। যদিও দেশের সংখ্যা খুব বেশি না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, একেক দেশেই আমাদের অনেক লোক আছে।’

‘শোনা যাচ্ছে যে, চারটি দেশ থেকেই এক লাখের মতো প্রবাসী ফিরছে’- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংখ্যা এখন বলতে পারব না। শুধু এইটুকু বলতে পারি যে, আপাতত কুয়েত থেকে দুই দফায় যথাক্রমে ১২৫ ও ১৯০ জন ফিরবে। বাকি যে দেশগুলো আছে সেগুলো আমরা আস্তে আস্তে দেখে বলব।’

বিজ্ঞাপন

মালদ্বীপ থেকে প্রবাসীদের পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে, মালদ্বীপ কী অবৈধ প্রবাসীদের নাকি বৈধ প্রবাসীদেরও পাঠাতে চাচ্ছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তিনি বলেছেন যে, সেখানে অনেক বাংলাদেশি অবৈধভাবে আছেন। এখন যেহেতু করোনার কারণে পর্যটন বন্ধ, হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ সেহেতু যারা বৈধভাবে আছেন তাদেরকে মালদ্বীপ সরকার বিভিন্নভাবে সাহায্য করছেন। কিন্তু যারা অবৈধভাবে আছেন (আনডকুমেন্টেড) তাদের অনেকেরই বেশি কষ্ট হচ্ছে। সেজন্য মালদ্বীপের মন্ত্রী বলেছেন যে, প্রথম দফায় তারা অবৈধ বাংলাদেশিদের নাম তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। মালদ্বীপে আমাদের রাষ্ট্রদূত অবৈধদের নাম তালিকাভুক্ত করতে সকলকে উৎসাহ যোগাচ্ছেন। এই নাম নিবন্ধনের কাজ শেষ হলে হয়ত ওই দেশের সরকার কিছু লোককে দেশে পাঠাবে। তবে আমরা আশা করি না যে, সব লোক চলে আসবে।’

বিশ্বে আরো অনেক দেশে বাংলাদেশের বড় শ্রম বাজার রয়েছে- সেগুলোর অবস্থা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কয়েকটি দেশ যোগাযোগ করেছে, এই মুহূর্তে আমরা নামগুলো বলতে চাই না। যারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে আমরা কেইস বাই কেইস সেগুলোর নিষ্পত্তি করব। আর যে সমস্ত দেশ আমাদের বলেছে যে, আপনারা না নিলে আপনাদের লোকগুলোকে আমরা অসুবিধায় ফেলব, তাদের কেইসটা আমরা প্রথম নিষ্পত্তি করছি।’

চলমান পরিস্থিতিতে এই সমস্যাগুলো প্রবাসী কোন ধরনের লোকদের নিয়ে পোহাতে হচ্ছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মূলত যারা অবৈধভাবে বিদেশে আছেন, তাদের নিয়ে। এই ইস্যুতে আমরা কিছুটা চাপের মধ্যে আছি। তবে এখন সব দেশই চাপের মধ্যে আছে। এজন্য এইটা খুব বিরাট সমস্যা না। তবে এটা একটা কঠিন সময়। আমরাতো একটা বিশেষ কঠিন সময়ে আছি, সে জন্য একটু সমস্যা।’

‘আমার ধারণা, ওদের (বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো) সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক এবং সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাতে হয়তো কঠিন অবস্থায় পড়তে হবে না।’- উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অবৈথ চাপ ড. এ কে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশি বিদেশ সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর