কৃষিতে এলইডি প্রযুক্তি, বাড়বে সবজি উৎপাদন
৭ এপ্রিল ২০২০ ০৮:২৯
ঢাকা: কৃষিপ্রধান দেশ হলেও বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় কৃষিজমির পরিমাণ কমছে। প্রায় ৭৬ লাখ হেক্টর আবাদি জমিতে ১৬ কোটি মানুষের জন্য খাবার উৎপাদন কষ্টসাধ্যই বটে। ফলে প্রতিবছরই আমাদের বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য আমাদানি করতে হচ্ছে।
তবে আগামীর কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা থেকে এলইডি প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আবুল ফজল মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিজ উৎপাদনে সূর্যালোকের পরিবর্তে ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় আলোক বর্ণালী নির্দিষ্ট করে ঘরেই সম্পূর্ণ জৈব উপায়ে ফসল উৎপাদন সম্ভব।
এ বিষয়ে গবেষক অধ্যাপক আবুল ফজল মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আনুমানিক ১ হাজার ৫০০ বর্গফুটের হলরুমেই আমরা স্তরে স্তরে স্পেকট্রাম টেকনোলজি ব্যাবহার করে ঢাকা শহরের মত বড় অঞ্চলের সবজির চাহিদাও পূরণ করতে পারব। আমরা ২০১৭ সাল থেকে এ নিয়ে গবেষণা শুরু করি। কয়েক রঙের আলো নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছি সাদা আলোয় সবজি যে পরিমাণ উৎপন্ন হয় নীল আলো ব্যবহারে তার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। এছাডাও লাল আলোতে ফল এর উৎপাদন বাড়ে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই কৃষি পদ্ধতিতে সময় নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের মাধ্যমে দিনের দৈর্ঘ্য ও যন্ত্রনির্ভর সেচ ব্যাবস্থা দেওয়া সম্ভব তাই সহযোগীর সংখ্যাও কম লাগে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বর্তমানে করোনা মহামারির মত যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ সময়েও সম্পূর্ণ নিরাপদে সবজি উৎপাদন ও তা গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।’
দেশে এ প্রযুক্তির পরিচিত হওয়া নিয়ে অধ্যাপক আ ফ ম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে এটি ব্যবহারে লাভবান হবেন সবাই। কারণ মাঠপর্যায়ে কোনো ফসল উৎপাদনের চেয়ে একই জায়গায় আমরা স্তরে স্তরে চাষে ১০ গুণ পর্যন্ত ফলন পাব। এছাড়াও শ্রমিকের সংখ্যা কম থাকায় এর উৎপাদন খরচও কম হবে।
তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতির চাষাবাদ। ফলে মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিতে এটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’ তাই ছাদের নিচে এলইডি লাইট ব্যবহার করে সবজি বা পণ্য উৎপাদনকে আধুনিক কৃষির সূচনা বলে ধারণা করছেন এই গবেষক।