Saturday 14 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুনি মাজেদের ফাঁসিতে ইতিহাস হবে কেন্দ্রীয় নতুন কারাগার


১১ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৩২ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ২১:৪৮

ঢাকা: ২০১৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে স্থানান্তর করা হয় কেরানীগঞ্জে। এর তিন বছর পর ২০১৮ সালে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চ তৈরির পর কেরানীগঞ্জ কারাগারে এখনও কারও ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি। তাই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসির মাধ্যমে কারাগারে প্রথম ফাঁসি হতে যাচ্ছে। আর প্রথম ফাঁসির জন্য জল্লাদসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১১ এপ্রিল) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

ডেপুটি জেলার সমমর্যাদার একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফাঁসি যে কোনো সময় কার্যকর করা হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এ কারাগারে কোনো আসামির প্রথম ফাঁসি হতে যাচ্ছে। আর সেটি হলো বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদের ফাঁসি।’

কারাগারের একজন জমাদার বলেন, ‘মাজেদের ফাঁসির জন্য সবকিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। যেহেতু এই কারাগারে এর আগে কোনো ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি সেহেতু কয়েক দফায় ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। ফিলিপাইন থেকে আনা ফাঁসির রশিতে পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। সবকিছু চেক করা হয়েছে। ১০ সদস্যের জল্লাদ টিমের কার কী দায়িত্ব তা মহড়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুই দফা এবং আজ শনিবার আরও এক দফা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

এদিকে মাজেদের সাথে পরিবারের ৫ সদস্যের একটি দল গত ১০ এপ্রিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে স্ত্রী সালেহা, স্ত্রীর বোন ও বোন জামাই, ভাতিজা ও একজন চাচাশশুর ছিলেন। তবে এটি শেষ সাক্ষাত কিনা তা জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মাহবুবুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, মাজেদের পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাত করেছে কারাগারে। তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা বলেছেন মাজেদের সাথে। আজ আবারো পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। সন্ধ্যায় আবার সাক্ষাৎ হতে পারে।

শনিবার রাতে ফাঁসি কার্যকরের কোনো সম্ভবনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। উর্ধতন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। তবে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

কারা সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি জল্লাদ টিম গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে মো. আবুল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা ঢাকা কোন্দ্রীয় কারাগারের কয়োদী। টিমের বাকি সদস্যদের নরসিংদী ও কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছে। এই টিম ই মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করবেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে চেয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানকে শনিবার বিকেল ৪ টায় ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন এমন একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ রাতে মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ।’

এর আগে, গত ৮ এপ্রিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনী কর্নেল (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছে দিয়েছেন রাস্ট্রপতি। এর ফলে তার ফাঁসি কার্যকর আর কোনো বাধা নেই কারা কর্তৃপক্ষের।

এর আগে (৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা জজ আদালত মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানার সেই কপি কারাগারে যায় এবং মাজেদ প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) ভোর পৌঁনে চারটায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী মাজেদকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী এই মাজেদ দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন। গত মাসের যেকোনো সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মাজেদ দেশে ফেরেন।

ক্যাপ্টেন মাজেদ বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ মাজেদের ফাঁসি

বিজ্ঞাপন

দামেস্কে ইসরায়েলি বিমান হামলা
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫০

আরো

সম্পর্কিত খবর