চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতির কাণ্ড
১৩ এপ্রিল ২০২০ ০০:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা দফতরের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া সেই নেতার বিরুদ্ধে মারধর, চুরি, ছিনতাইয়ের একাধিক অভিযোও রয়েছে।
রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নাম্বার গেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার হন মো. বেলায়েত। তিনি নিরাপত্তা দফতরের সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযুক্ত মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন বাংলার মুখ গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম। তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন।
জানা যায়, শনিবার (১১এপ্রিল) নাজিমের ভাই ও তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নাম্বার গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে ক্যাম্পাস লকডাউন থাকায় পুলিশ বাধা প্রদান করে। এই ঘটনায় জের ধরে রোববার (১২ এপ্রিল) বেলায়েতের সঙ্গে নাজিমের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাকে তলপেটে লাথি মারতে থাকে নাজিম। পরে লাথির আঘাতে বেলায়েতের প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হয়। সেখান থেকে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, মারধরের পর রোববার (১২ এপ্রিল) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে একটি দোকান থেকে পুলিশ ও প্রক্টোরিয়ার বডির যৌথ অভিযানে কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চুরি করা মালামাল উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত নাজিম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট কথা। সে সম্ভবত করোনা রোগী। তার নাক-মুখ দিয়ে নাকি রক্ত যাচ্ছে। মাস্ক ছাড়া দুই নাম্বার গেটে বসে ছিল। তাকে মেডিকেলে যাওয়ার পরামর্শ দিলে সে রেগে যায়। সবাইকে ভুল বুঝিয়ে বলে আমি তাকে মারধর করছি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এর আগেও, এই ছাত্রলীগ নেতা নাজিমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর, চুরি, ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। চাঁদা না দেওয়ায় গত বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদি দোকানের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠে মোহাম্মদ নাজিমের বিরুদ্ধে।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের সামগ্রিক উপকরণ চুরি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা থাকাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মচারীকে মারধর করেছে। লেডিস ঝুপড়িতে কম জায়গা বরাদ্দ নিয়ে বিশাল জায়গা দখলে নিয়ে কোনো প্রকার ভাড়া না দিয়ে ব্যাবসা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগও রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। একের পর এক অপরাধ করে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসহযোগীতায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ।
এই বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, কোন কারণ ছাড়াই একজনকে মারধর করেছে। শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য প্রায় দুই আড়াই ঘণ্টা খুঁজছি পাইনি। ওর একটা অবৈধ দোকান ছিল। ওই দোকানটা ভেঙে অবৈধ চুরি করা কিছু মাল, ও রামদা ছিল সেগুলো উদ্ধার করছি। এর আগে ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল কি না আমার জানা নেই। আমার সময়ে যেটা পাচ্ছি এর বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে আজকের এইটা ব্যাবস্থা নিচ্ছি।