ঢাকা: সারাদেশে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৩৫টি তৈরি পোশাক কারখানায় মার্চ মাসের বেতন হয়েছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানা ৯১৭টি ও বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানা ৩১৮টি। তবে সোমবারও (১৩ এপ্রিল) বেতনের দাবিতে ঢাকাসহ বেশকিছু কারখানার সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। আর নির্দিষ্ট সময়েই বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছে পোশাক মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।
সোমবার বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, বিজিএমইএ’র ২২৭৪ সদস্য কারখানার মধ্যে ৯১৭টি পোশাক কারখানায় মার্চ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ১২৪টি, গাজীপুরে ৩৫৯টি, সাভার-আশুলিয়ায় ২০৭টি, নারায়ণগঞ্জে ৮২টি, চট্টগ্রামের ১১৪টি ও অন্যান্য এলাকার ৩১টি কারখানায় মার্চ মাসের বেতন হয়েছে।
এদিকে বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, চালু থাকা ৮৩৩টি কারখানার মধ্যে ৩১৮টিতে মার্চ মাসের বেতন হয়েছে। আরও বেশকিছু কারখানাও বিছিন্নভাবে বেতন দিচ্ছে।
এর আগে, রোববার বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ১৬ তারিখের মধ্যে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করার কথা রয়েছে। সেই সময় এখনো অতিক্রম হয়নি। আমরা আশাবাদী, ৮০ ভাগ কারখানা এই সময়ের মধ্যে তাদের বেতন পরিশোধ করে ফেলবে। আমরা সব সদস্যকে অনুরোধ করেছি, তাদের গেটগুলোতে বেতন দেওয়ার নির্দিষ্ট তারিখসহ পরিষ্কার নোটিশ দিতে। শ্রমিকরা আশ্বাস পেতে চায়। বেতন দেওয়ার সঠিক তারিখ নিশ্চিত করা মালিকদের দায়িত্ব।
বিকেএমইএ পরিচালক ফজলে শামীম এহসান সোমবার সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের ৮৩৩টি কারখানার মধ্যে ৩১৮টিতে মার্চ মাসের বেতন হয়েছে। আরও বেশকিছু কারখানাও বিছিন্নভাবে বেতন দিচ্ছে। আশা করি, ১৬ তারিখের মধ্যে সব কারখানায় বেতন হয়ে যাবে।
এদিকে, সোমবার দুপুরে রাজধানীর আজমপুরে বিক্ষোভ করে টেক্স টেইলর এক্সপার্ট বিডি লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা। তাদের বিক্ষোভে আজমপুর মোড় থেকে জসিমউদদীন মোড়ের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, শুধু মার্চের নয়, দুই-তিন মাসের বেতন দেওয়া হয়নি তাদের। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট করানোর জন্য অনেকের কাগজ ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ। এসব বিষয়ে জানতে কারখানার এমডি এ কে এম আব্দুল্লাহর নম্বরে একাধিবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত ড্রাগন সোয়েটারের কর্মীরা রোববার কারখানাটির সামনে বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন। এই কারখানার একজন শ্রমিক সোমবার সারাবাংলাকে বলেন, কোনো কোনো শ্রমিকের তিন-চার মাসের বেতন বাকি রয়েছে। গতকাল কারখানার সামনে বিক্ষোভ হয়েছিল। আজ অনেকের বেতন দিচ্ছে। স্টাফদের ডিসেম্বর মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে আজ (সোমবার)। আর শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দিচ্ছে। এছাড়া অন্য একটি ক্যাটাগরির শ্রমিকদের জানুয়ারি মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কারখানার আরেক শ্রমিক জানান, কারখানার ছয়শ শ্রমিকের মধ্যে চারশ জনই গ্রামে রয়েছেন। যারা গ্রামে আছেন বা কারখানায় উপস্থিত হতে পারছেন না, তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। মালিকপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, কারখানায় উপস্থিত হতে পারলেই বেতন দেওয়া হবে। অথচ এসব শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, অ্যাকাউন্টেই বেতন দেওয়া যেত। এছাড়া এই কারখানাটিতে দীর্ঘদিন ধরেই বেতনের সমস্যা রয়েছে। প্রায় প্রতিমাসেই এই কারখানাটিতে চাকরিচ্যুতির ঘটনাও ঘটে।