Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিয়মিত খেতে পাচ্ছেন না দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো


১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৪৫

ঢাকা: গত ২০ দিন ধরে কোনো কাজ নেই কাঠমিস্ত্রী মো. আজাদ মোল্লার। কিভাবে সময়গুলো যাচ্ছে সেটা কাউকে বলতেও পারছেন না। খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে। বাসায় চালও নেই যে শুধু ভাতটা রান্না করে সন্তানদের মুখে দেবেন।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টে এই প্রতিবেদকের কথা হয় আজাদ মোল্লার সঙ্গে।

২০ দিন আগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন। নাম করা ফার্নিচার। হঠাৎ মালিক এসে জানালেন পরদিন থেকে দোকান বন্ধ থাকবে। কেন বন্ধ থাকবে তখন কিছুই বলেননি। পরে ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয় করোনাভাইরাসের কারণে দোকান বন্ধ। পরিস্থিতি ভালো না হলে দোকান খুলবে না। প্রতিদিন ফার্নিচারের কাজ করে পেতেন ৭ শ টাকা। সেই টাকার ওপর নির্ভরশীল পুরো পরিবার।

স্ত্রী ও দুই সন্তান বাড়িতে রয়েছে আজাদের। তারা দুজনই পড়ালেখা করে। তাদের তো খরচ আছে। সবকিছু এখন বন্ধ তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেই বেতন দিতে হবে। সেটা নিয়ে এখন চিন্তা না করলেও এখন কিভাবে বেঁচে থাকবেন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

আজাদ বলেন, সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বাচ্চা দুটোকে বলেছি খাবার আনতে যাচ্ছি। কথাগুলো বলছিলেন আর দুচোখ দিয়ে অশ্রু ফেলছিলেন। তিনি বলেন, সরকার তো বড়লোকদের সহযোগিতা করছে আমরা মরে গেলেও আমাদের পাশে কেউ আসবে না।

রফিক হাসান। থাকেন বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টে। ছোট দুই রুমের বাসা নিয়ে। তিনি একজন ইলেকট্রিশিয়ান। বলেন, কাজ করলে টাকা আর কাজ না করলে টাকা নেই। পরিবারে রয়েছে দুই মেয়ে এক ছেলে। স্ত্রী, মা-বাবা। এতবড় একটি পরিবার যার পুরোটা চলে রফিক হাসানের আয়ের ওপর। গত ২২ দিন ধরে তার কোনো কাজ নেই।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, গত চার দিন আগে বাসার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। প্রতিদিন সকালে ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হই আর রাস্তার পাশে বসে থাকি। কেউ কিছুই বলে না। সারাদিন না খেয়ে বিকেলে বাসায় যায়।

তিনি জানান, স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলেন। সেখানে মুখ দেখে ত্রাণ দেওয়া হয়। যারা ভোটার শুধু তারা ত্রাণ পান।

বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টে এমন আরও কয়েকজন রাসেল, জসিম, জাহাঙ্গীর ও ওমর ফারুক। যাদের প্রত্যেককে দিনমজুর। কেউ চা বিক্রি করতেন, কেউ জুতা সেলাই করতে কিংবা দোকানে কাজ করতেন। করোনাভাইরাসের কারণে এখন সবই বন্ধ। তাদের জীবনেও এখন অন্ধকার। কবে আলো আসবে কিংবা আদৌ দেশে স্বাভাবিক অবস্থা আসা অবধি বেঁচে থাকবেন না সেটাও জানেন না। শুধু সবাই এটাই বলেন, আমরা ভালো নেই। আমাদের দিকে সরকার বা বিত্তবানদের নজর নেই। আমরা মরলেও কেও দেখতে আসবে না।

আনা খাওয়া খাবার দিন নিয়মিত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর