ইভ্যালি শপে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা, পণ্য ডেলিভারি একদিনে
১৭ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৪৪
ঢাকা: করোনা মোকাবিলায় সতর্কতার অংশ হিসেবে সবাইকে নিজ নিজ বাসা বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হচ্ছে, সেলফ বা হোম কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। এমনই প্রেক্ষাপটে অর্ডার করার একদিনের মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ ২৫টিরও বেশি জেলার নাগরিকদের বাড়িতে বাড়িতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ।
গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রুততম সময়ে পৌঁছে দেওয়ার এই কার্যক্রম চালু করে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেট প্লেস ইভ্যালি। যাত্রা শুরুর প্রথম দিকে সরবরাহের সময় নিয়ে গ্রাহকদের কিছু অভিযোগ থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই অভিযোগ তুলনামূলকভাবে কম।
সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য গ্রাহকদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইভ্যালির এক্সপ্রেস শপে এখন বেশিরভাগ পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। আর এমন সেবায় বেশ সন্তুষ্ট ক্রেতা।
মানিকগঞ্জের মহাদেবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আমিনুর হোসেন ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপে অর্ডারের এক দিনের মধ্যেই তার পণ্যের সরবরাহ পেয়েছেন। নিজ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইভ্যালির অফিসিলিয়াল গ্রুপে তিনি লেখেন, ধন্যবাদ ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ মহাদেবপুর ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জকে এত দ্রুত ডেলিভারি দেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ ইভ্যালিকে মানিকগঞ্জে এক্সপ্রেস শপ দেওয়ার জন্য। বুধবার (১৫ এপ্রিল) অর্ডার করে বৃহস্পতিবারেই (১৬ এপ্রিল) ডেলিভারি পেয়ে গেছি।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা মাহের চৌধুরী বলেন, শুক্রবার (১০ এপ্রিল) কোকা-কোলা এবং স্প্রাইট অর্ডার করি। পরের দিন দুপুর ১টায় অর্থাৎ ১৬ ঘণ্টার মধ্যেই পণ্যের ডেলিভারি পেয়ে যাই।
এদিকে ইভ্যালির এমন ব্যবসায়িক উদ্যোগে বেশ সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরাও। মিরপুর এলাকায় এক্সপ্রেস শপ পরিচালনা করেন এমন এক ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ বলেন, ‘লকডডাউনের সময় থেকে তো ব্যবসা একরকম বন্ধ। আমরা যারা গ্রোসারি আইটেম বিক্রি করি দোকানে আমাদের তো দৈনিক আয়। এমন সময়ে ইভ্যালির এমন এক্সপ্রেস শপের উদ্যোগ আমাদের ব্যবসার চাকাকে সচল রেখেছে। আমাদের বিক্রির ওপর একটা কমিশন পাচ্ছি আমরা, সঠিক সময়ে পেমেন্টও পেয়ে যাচ্ছি। আবার ইভ্যালি আমাদের থেকে এখন কোনো কমিশনও নিচ্ছে না। কাজেই আমাদের আয়ের একটা পথ খোলা থাকছে ইভ্যালির মাধ্যমে।’
ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে রাজধানীর ১৩টি এলাকার জন্য দুইটি করে মোট ২৬টি ভার্চুয়াল শপ নিয়ে এক্সপ্রেস শপ চালু করি আমরা। বর্তমানে রাজধানী ঢাকাসহ ২৫টিরও বেশি জেলায় চালু করা হয়েছে দুই শতাধিক ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ। এদের মধ্যে ওষুধ সরবরাহের জন্য আছে ২২টি ফার্মেসি এক্সপ্রেস শপ। জেলা পর্যায় পেরিয়ে এক্সপ্রেস শপের কার্যক্রম চালু আছে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং উপজেলা পর্যায়েও। এটা আমাদের একটা সিএসআর উদ্যোগের মতো। গ্রাহকদের ক্যাশব্যাক অফার দিচ্ছি যেন তারা ঘরে বসেই অনলাইনে পণ্য কিনতে আরও বেশি আগ্রহী হন। অন্যদিকে সেলারদেরও বোনাস দিচ্ছি যেন তারা কোনোভাবেই বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দাম না রাখেন।’
রাসেল আরও বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার অর্ডার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অনুমান, অচিরেই দৈনিক অর্ডারের সংখ্যা পাঁচ হাজারে পৌঁছাবে। শুরুর দিকে আমরা এত অর্ডারের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না তাই কিছু অর্ডার ডেলিভারিতে সময় লাগছিল। আমরা যে এখনো শতভাগ সফলতার সঙ্গে ডেলিভারি দিতে পারছি তা না। আর এর কারণ করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা। পণ্যের সরবরাহ কম, ডেলিভারি ম্যানও চাহিদার তুলনায় কম এছাড়াও আরও সমস্যা আছে। তবুও আমাদের সফল ডেলিভারির অনুপাত ৯৫ শতাংশের ওপরে। এটিকে আমরা শতভাগে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমাদের একটা ‘ওয়ান ডে ডেলিভারি’ চ্যালেঞ্জ আছে। সেটাকে আমরা পূরণ করতে চাই। এর জন্য আমরা শুরু থেকেই সেলারদের কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছি।’
এদিকে ইভ্যালির মতো বিভিন্ন মতো বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের এমন সেবাকে সাধুবাদ জানিয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ইক্যাবের পরিচালক আসিফ আহনাফ বলেন, করোনার এই সময়ে দেশে ই-কমার্সের গুরত্ব নতুন করে উঠে এসেছে আমাদের সামনে। এমন প্রেক্ষাপটে ইভ্যালির মতো ই-কমার্স এবং ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য গ্রাহকদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে। একবার ভাবুন, এই সেবাটা যদি না থাকতো তাহলে এমন অবস্থায় কি হতো? মুদি আইটেম, ওষুধ এসব এখন ঘরে বসেই পাচ্ছেন গ্রাহকেরা।’
আসিফ আহনাফ বলেন, ‘ইভ্যালিসহ যারাই এই সেবা দিচ্ছে তারা সংকটকালীন দারুণ কাজ করছে। আমরা ইক্যাবের পক্ষ থেকেও তাদের সবরকমের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’