Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে ১৬ দিনে চালু করোনার বিশেষায়িত হাসপাতাল


২১ এপ্রিল ২০২০ ২০:১৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামে চালু হয়েছে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে মাত্র ১৬ দিনে এই হাসপাতালটি গড়ে তোলা হয়েছে।

‘চট্টগ্রাম ফিল্ড হসপিটাল’ নামে বিশেষায়িত এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিদ্যুৎ বড়ুয়া। আর হাসপাতালটি তৈরিতে ভূমিসহ বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়েছে নাভানা গ্রুপ। করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় বাংলাদেশের প্রথম এই হাসপাতালে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন ডাক্তার-নার্সসহ একদল তরুণ-যুবক।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজের (বিআইটিআইডি) কাছেই এই ফিল্ড হাসপাতালের অবস্থান। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ৬০টি সাধারণ শয্যা নিয়ে চালু করা হয়েছে এই হাসপাতাল। চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে পাঁচটি ছোট ভেন্টিলেটর, নেবুলাইজার, অক্সিজেনসহ সুরক্ষা সামগ্রী। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ১০টি আইসিইউ শয্যা চালু হবে এই ফিল্ড হসপিটালে।

বিদ্যুৎ বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত ৯৭ শতাংশ রোগির আইসিইউ সাপোর্ট লাগছে না। সে হিসেবে আমাদের কাছে ৯৭ শতাংশ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আইসিইউ বেডও আমাদের আছে। কিন্তু সেগুলো স্থাপন করার লোক প্রথমে পাইনি। আগামী আট থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেগুলো আমরা চালু করব। এছাড়া রোগীদের জন্য আমাদের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি মাইক্রোবাসও আছে।’

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান, ১০ জন ডাক্তারসহ ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তিন শিফটের প্রতিটিতে তিন জন করে ডাক্তার চিকিৎসা দেবেন। সঙ্গে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে স্বেচ্ছাসেবকরা আছেন। রোগী ছাড়াও কমপক্ষে ৩০ জনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে হাসপাতালেই।

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি শুরু হয়েছে। এরপরই ফিল্ড হসপিটাল গড়ার কাজে নেমে পড়েন তারা। নাভানা গ্রুপ তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আফতাব অটোমোবাইলসের ১২ হাজার বর্গফুটের একটি অবকাঠামো হাসপাতালের জন্য দেয়। সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছে হাসপাতালটি।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়ার ভাই বিদ্যুৎ বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ’৩০ মার্চ থেকে আমরা কয়েকজন চিকিৎসক মিলে একটি ফিল্ড হসপিটাল গড়ার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর নাভানা গ্রুপ এগিয়ে আসে। ৪ এপ্রিল থেকে আমরা হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করি। আজ (২১ এপ্রিল) হাসপাতাল চালু করেছি। ১৬ দিনেই আমরা হাসপাতালটি বানিয়ে চালু করতে পেরেছি।’

অর্থ সংস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনুদান ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে হাসপাতাল চালু করেছি। হাসপাতাল পরিচালনা করতে টাকার প্রয়োজন আছে। সেটাও অনুদান থেকেই নির্বাহ করা হবে।’

শুরুর দিনে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৭০ বছর বয়সী এক লোক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন জানিয়ে বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সে করে এসেছেন তিনি। এর আগে তিনি নমুনা পরীক্ষা করেছেন। সেখানে করোনা নেগেটিভ এসেছে। আমরাও পরীক্ষা করে দেখলাম, উনার শ্বাসকষ্ট করোনার সংক্রমণজনিত নয়। পরে তাকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা শুধু জ্বর, সর্দি, কাশি এবং এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকলে তাদের চিকিৎসা দেবো।’

করোনার চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিদ্যুৎ বড়ুয়া টপ নিউজ নাভানা গ্রুপ ফিল্ড হসপিটাল বিদ্যুৎ বড়ুয়া

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর