Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভার্চুয়াল সম্মেলনে যে ৫ প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী


২৩ এপ্রিল ২০২০ ২১:২৭

ঢাকা: করোনা সংকট মোকাবিলায় গোটা বিশ্বকে একজোট হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবার সমন্বিত দায়িত্বশীলতা ও অংশীদারিত্বে গুরুত্ব দিয়ে বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবিলায় পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন তিনি।

এসব প্রস্তাবের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্থনৈতিক সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার, অভিবাসীদের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ এবং সংকট মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তাবও তুলে ধরেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার বিষয়ক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে এ আহ্বান তিনি। ‘এনহ্যান্সিং রিজিওন্যাল কো-অপারেশন ইন সাউথ এশিয়া টু কমব্যাট কোভিড-১৯ রিলেটেড ইমপ্যাক্ট অন ইটস ইকোনোমিকস’ শীর্ষক এ ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)।

আরও পড়ুন- করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বকে একজোট হওয়ার আহ্বান

ভার্চুয়াল সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব একটি সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এসময় তিনি পাঁচটি বিষয়ে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন তিনি বলেন—

প্রথমত, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দ্রুত বাড়বে। গত এক দশকে আমরা আমাদের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেককে দারিদ্রসীমা থেকে বের করে এনেছিলাম। তাদের অনেকে এখন আবার আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। তাই বিশ্বকে মানবকল্যাণ, বৈষম্য দূরীকরণ, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা এবং কোভিড-১৯-এর আগের অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নতুন করে ভাবতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আমাদের প্রয়োজন জি-৭, জি-২০ ও ওইসিডি’র মতো সংগঠনগুলো থেকে দৃঢ় ও পরিকল্পিত বৈশ্বিক নেতৃত্ব। জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকেও এগিয়ে আসা উচিত। আমি অধ্যাপক সোয়াবকে (বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরোমের প্রতিষ্ঠাতা) প্রশংসা করছি। কারন তিনি সংক্রামক রোগগুলোকে ২০২০-এর বৈশ্বিক ঝুঁকি সম্পর্কিত প্রতিবেদনে অন্যতম মুখ্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সুতরাং ফোরাম ও জাতিসংঘের উচিত সরকার ও বিশ্ব ব্যবসাকে এ বিষয়ে একত্রিত করা এবং নেতৃত্ব দেওয়া।

তৃতীয়ত, আমরা এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা, কাজ ও উৎপাদনে পরিবর্তন দেখছি। কোভিড পরবর্তী সময়ে নতুন নীতি, স্ট্যান্ডার্ড ও পদ্ধতি দেখব। এরই মধ্যে আমরা দেখছি সরবরাহ চেইনে থাকা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডকে যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে না। সুতরাং আমাদের এমন কৌশল ও বাস্তবমুখী সহায়তা ব্যবস্থা নিতে হবে যেন বাংলাদেশের মতো দেশগুলো টিকে থাকতে পারে।

চতুর্থত, অভিবাসী কর্মীরা বেকারত্বসহ অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি পার করছেন। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। সুতরাং বোঝা ও দায়িত্ব শেয়ার করার মতো আমাদের এমন একটি অর্থপূর্ণ  বৈশ্বিক কৌশল ও পরিকল্পনা নিতে হবে।

পঞ্চমত, এই মহামারির সময়ে আমরা কার্যকরভাবে বেশকিছু ডিজিটাল প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার করেছি। যেমন— কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংক্রমণ চিহ্নিত করা। ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য আমরা বিভিন্ন খাতে এরকম উদ্ভাবনীমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রেসিডেন্ট বর্জ ব্র্যান্ডের স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে শুরু হয় সম্মেলন। পরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে সবাইকে ব্রিফ করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. পুনম খেত্রপাল সিং। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী বক্তব্য দেন।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পক্ষ থেকে সারসংক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ তুলে ধরার মাধ্যমে ভার্চুয়াল এই সম্মেলন শেষ হয়।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম করোনা সংকট করোনাভাইরাস টপ নিউজ ডাব্লিউইএফ পাঁচ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বকে একজোট হওয়ার আহ্বান ভার্চুয়াল সম্মেলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর