করোনায় আক্রান্ত ২১৮ পুলিশ সদস্যের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা: সদর দফতর
২৪ এপ্রিল ২০২০ ০১:০৩
ঢাকা: করোনায় এখন পর্যন্ত পুলিশের ২১৮ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী উপ মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এআইজি মিডিয়া জানান, সারাদেশে করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা সংক্রমিত হয়েছেন। গতকাল (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত ২১৭ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। আজ একজনসহ মোট ২১৮ জন আক্রান্ত হলেন।
সোহেল রানা বলেন, আক্রান্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সকল কিছু সরবরাহ করা হচ্ছে। কাউকে বিচলিত না হতে বলা হয়েছে। এরপরেও দেশের মানুষ যাতে ঘরে অবস্থান করেন।
জানা যায়, ১১৮ জনই ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশ সদস্য। ১১৮ জনের মধ্যে গতকালই পজিটিভ ধরা পড়ে ১৬ জন। বাকীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ১৬ , গাজীপুর মেট্রো ২৬, কিশোরগঞ্জ ৯, গোপালগঞ্জ ১৮ ও গাজীপুর জেলায় ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বাকী সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জেলা ও পুলিশের ইউনিটে রয়েছে। গত ১১ এপ্রিল ঢাকায় পুলিশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত কেউ সুস্থ হননি। মারাও যাননি কেউ।
করোনায় আক্রান্ত হওয়া ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের স্বজন ও ইউনিট প্রধানরা বলছেন, লকডাউন এলাকায় লোকজনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ, করোনা আক্রান্ত অলিগলিতে টহল ডিউটি, সড়কে জীবাণুনাশক ছিটানো, ত্রাণ বিতরণ, ত্রাণ বিতরণে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা, রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানোসহ করোনা আক্রান্ত রোগীর দাফনে অংশ নিতে গিয়েই পুলিশ সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া শুরুতেই এসব সদস্যের কোনো নিরাপত্তা ইকুইপমেন্টও ছিল না। ফলে একজন আক্রান্ত হলে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে একে অপরকে ছড়িয়েছে।
ডিএমপি সুত্রে জানা গেছে, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতাল ছাড়াও আরও দুটি হাসপাতালকে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালকে ‘করোনা হাসপাতাল’ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। পুলিশের আক্রান্ত সদস্যরা সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।
গতকাল (২২ এপ্রিল) পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ মাঠ পর্যায়ের পুলিশের ইউনিট প্রধানদের সাথে ভিডিও বার্তায় আলাপকালে বলেন, পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সাড়ে ছয়শ’ বেডের হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশের নিজস্ব হাসপাতালে শয্যা আছে আড়াইশ’। আর সাড়ে চারশ’ বেডের দুটি হাসপাতাল ভাড়া নেওয়া হয়েছে। পুলিশ নিজেরাই পিসিআর ল্যাব বসাচ্ছে। তখন পরীক্ষার জন্য অন্য সংস্থার কাছে যাওয়া লাগবে না। পুলিশের জন্য ৫০টি আইসিইউ শয্যাও প্রস্তুত করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ পিছপা হবে না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের সুরক্ষিত রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে।