Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চবি শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়া মওকুফের দাবি, রাজি নয় মালিক সমিতি


৩ মে ২০২০ ১৭:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে অনেক আগে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা কটেজ, মেস ছেড়ে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা মেস ও কটেজে না থাকলেও শিক্ষার্থীদের ভাড়া গুণতে হচ্ছে। এছাড়া, মালিকরা ভাড়া পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে। এই নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে ভাড়া মওকুফের দাবিও তুলেছেন। অন্যদিকে কটেজ মালিক সমিতি জানিয়েছে কোনোকিছুতে ভাড়া মওকুফ করতে রাজি নয় তারা।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে, শহরে বা ক্যাম্পাসের আশেপাশে মেস, কটেজ থাকা অনাবাসিক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মাসগুলোর ভাড়া পরিশোধের দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। এই সময়টাতে যেন কোনো শিক্ষার্থীকে ভাড়া পরিশোধের চাপ দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রসাশনকে ক্যাম্পাসের আশেপাশের মেস, কটেজ মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ও অনিয়মিত মোট শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য আটটি এবং ছাত্রীদের জন্য পাঁচটিসহ মোট ১৩টি হল আছে। এর মধ্যে ছাত্রদের দুটি ও ছাত্রীদের একটটিসহ মোট ৩টি হল নতুন নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলো এখনো খুলে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ছাত্রীদের শেখ হাসিনা হল চালু হলেও দ্বিতীয় পর্যায় কাজও এখনো শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের পৃথক দুটি মাস্টার দা সূর্যসেন হল রয়েছে। যেসব হল চালু আছে মোট প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা আছে। সে হিসেবে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী শহর ও ক্যাম্পাসের আশেপাশে মেস, কটেজগুলোতে ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে ক্যাম্পাসের ভাড়াটিয়া মেস, কটেজগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার শিক্ষার্থী থাকেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের মূল অর্থ উপার্জন টিউশন ও পার্ট টাইম জব করে তাদের পড়াশোনার খরচ চালান। করোনার ক্রান্তিকালে এসব অর্থ উপার্জনের পথ তাদের বন্ধ হয়ে পড়েছে। করোনার এই পরিস্থিতিতে মেস ভাড়া, কটেজ ভাড়া মওকুফ করলে উপকৃত হবে। পুরো ভাড়া মওকুফ সম্ভব না কমপক্ষে দুই মাসের ভাড়া কমানো উচিত বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, রোববার (৫ এপ্রিল) দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কটেজগুলোর ভাড়া এক মাস মওকুফের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদ।

এদিকে, গেল সোমবার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ২৩ দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। তারপরে, রোববার (১২ এপ্রিল) নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া, সোমবার (২৭ এপ্রিল) নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে পারেনি তাই শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারীর এই পরিস্থিতিতে যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের ভাড়া পরিশোধে প্রশাসন যেন সহযোগিতা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। একসঙ্গে এত মাসের ভাড়া জমা হলে আমার পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। তাই পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সময়ে ভাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সহযোগিতা করে খুবই উপকৃত হবে।

কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম সারাবাংলাকে বলেন,কটেজ গুলোর প্রত্যেকটা রুমে ছেলেদের মালমাত্তা রয়ে গেছে। সেগুলো নিরাপত্তার জন্য আমাদের দারোয়ান রাখতে হয়েছে। তাদের বেতন দিতে হচ্ছে। ইলেকট্রিকের বিল দিতে হচ্ছে। করোনা মহামারী আসার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমস্ত ছাত্রদের হল থেকে বের করে দিয়েছে। পরে যে ছাত্ররা যেতে চাইনা তারা আমাদের কটেজগুলোতে উঠে গেছে। সবকিছু আমাদের করতে হচ্ছে। কোনোকিছুতে বাড়া মওকুফ করা যাচ্ছে না। আমাদের কিছু করার নাই।

এই বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, এই প্রক্রিয়া শুরু করছি। কটেজ মালিক সমিতির সঙ্গে আলাপ হয়েছে। উনারা ভাড়া মওকুফ করবেন কি না জানি না। উনাদের তো বাধ্য করতে পারব না। তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে আবেদন জানাব।

কটেজ চবি বিশ্ববিদ্যলয় ভাড়া শিক্ষার্থী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর