ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১১০০ কোটি টাকা সিড মানি চেয়ে চিঠি
৬ মে ২০২০ ১৭:৫৭
ঢাকা: করোনা পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের জন্য ঘোষিত প্যাকেজে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তার জন্য সিড মানি হিসেবে ১১০০ কোটি টাকা চেয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। গত ৩০ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই সিড মানি দিয়ে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন পাঁচশত কোটি ও বিসিক ছয়শত কোটি টাকার ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।
কোভিড-১৯’র প্রাদুর্ভাবের কারণে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাগণের অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বুধবার (৬ মে) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার এএইচএম মাসুম বিল্লাহ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গত ৫ এপ্রিল এসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এই অর্থ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ এপ্রিল একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে ইতিপূর্বে ঋণ গ্রহীতারা বিশেষ সুবিধা পাবে।
এতে আরও বলা হয়, এসএমই খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদান, করোনা পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ এবং এ খাতসংশ্লিষ্টরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য ‘এসএমই খাত উজ্জীবন সংক্রান্ত একটি কমিটি’ গঠন করা হয়। গত ১৬ এপ্রিল গঠিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ট গঠিত কমিটিকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ ও সুপারিশমালা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২২ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘এসএমই খাত উজ্জীবন সংক্রান্ত কমিটি’র ১ম সভা হয়। সভায় জানানো হয়, বর্তমানে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে প্রায় ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা বর্তমানে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। অবশিষ্ট ৮৫ শতাংশ উদ্যোক্তা আনুষ্ঠানিক ঋণ কার্যক্রমে জড়িত নন এবং তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় আনুষ্ঠানিক হিসাব সংরক্ষণে অভ্যস্ত নন।
সভায় আরও জানানো হয়, করোনার প্রাদুর্ভাবের সংকটকালে বেঁচে থাকার জন্য বাস্তবিকপক্ষে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও তাদের সাথে সম্পৃক্তদের বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন। এতে আরও বলা হয় ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিসিকের অনুকূলে মোট ১ হাজার একশ’ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে বরাদ্দ প্রদানের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ৩০ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৯ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ৪৬ হাজার ২৯১টি উৎপাদন ইউনিটের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প। বর্তমানে দেশের উৎপাদন খাতের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং এ শিল্পের সাথে ১৩ লক্ষ ৯১ হাজার শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন।