নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে সাংবাদিক প্লাবনের বিরুদ্ধে মামলা
১১ মে ২০২০ ১৮:১৫
ঢাকা: নারী নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ এনে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার রেজাউল করিম প্লাবনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার স্ত্রী সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাজিদা ইসলাম পারুল।
সোমবার (১১ মে) দুপুরে পারুল বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে পারুল অভিযোগ করেন, সংবাদকর্মী হিসেবে ঘনিষ্ঠতার পর রেজাউল করিম ওরফে প্লাবনের প্রণয়ে জড়িয়ে পড়ি। গত ২ এপ্রিল আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। ঢাকার মীরবাগে ঘর-সংসার শুরু করি। এরপর আমি তাকে শ্বশুরবাড়ি নেওয়ার অনুরোধ করি। কিন্তু আমার প্লাবন যৌতুকের দাবি তোলে। সে জানায়, আমার বাড়িতে তোমাকে নিতে গেলে একটি ফ্ল্যাট বা নগদ ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে। তখন আমি বুঝতে পারি প্রতারণা করে যৌতুকের লোভে সে আমাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পরই জানতে পারি বিভিন্ন নারীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। নানাভাবে বুঝিয়ে যখন যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানাই এরপর আমার ওপর নেমে আসে শারীরিক নির্যাতন।
এর মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল প্লাবন আমাকে জানায়, বাড়িতে তার মা খুবই অসুস্থ। তাকে জরুরিভিত্তিতে কুড়িগ্রামের চিলমারীর নিজ বাড়িতে যেতে হবে। যেহেতু আমার শাশুড়ি অসুস্থ্ সে কারণে আমিও তার সাথে যেতে চাই। প্লাবন আমাকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। একপর্যায়ে এ সব নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। আমাকে মারধর করে। ওই সময় আমি তাকে জানাই, আমার প্রেগনেন্সি পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আরও বেশি মারতে শুরু করে। এরপর বাসায় ফেলে রেখেই সে মোটরসাইকেলযোগে নিজ বাড়িতে চলে যায়।
এরপর আমি আমার মা-বোন এবং ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে পরামর্শ করি। তারা আমাকে সুস্থ বোধ করলে অসুস্থ শাশুড়িকে দেখতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। গত ৫ মে শাশুড়িকে দেখার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে চিলমারীতে যাই। কিন্তু আমাকে শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যরা যৌতুক দাবি করেন। সবাই মিলে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। পরে উপস্থিত সাংবাদিকরা আমাকে উদ্ধার করে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
চিলমারীতে মামলা করতে চাইলে স্থানীয় থানা মামলাটি নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ঢাকায় ফিরে আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরই মধ্যে আমার গর্ভের ভ্রূণটি নষ্ট হয়ে যায় এবং আমি চলাচলের শক্তি হারাই।
এ ব্যাপারে জানতে পারুলের নম্বরে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে রেজাউল করিম প্লাবনের মোবাইল নম্বরে কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।