৫০ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির উদ্বোধন সকালে
১৪ মে ২০২০ ০১:২০
ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন কোটি মানুষ। বিশেষ করে এই দুর্যোগে রিকশা ও ভ্যানচালক, মোটর শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিকদের মতো নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এমন নিম্ন আয়ের ৫০ লাখ পরিবারের জন্য এবার নগদ অর্থ সহায়তা করছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দরিদ্র এসব পরিবারের প্রতিটির কাছে পৌঁছে যাবে আড়াই হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে নিম্ন আয়ের এসব পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণের কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি একইসঙ্গে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জন্য স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ কর্মসূচিতে একেকটি পরিবারে চার জন করে সদস্য ধরা হয়েছে। সেই হিসাবে ৫০ লাখ পরিবারের অর্থ সহায়তার মাধ্যমে উপকারভোগী হবেন ২ কোটি মানুষ। আর এই কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুই শাখা থেকে এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ দেওয়ার জন্য ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট শাখা-১ থেকে ৬২৭ কোটি টাকা ও বাজেট শাখা-৩ থেকে ৬৩০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। ছাড় করা অর্থের মধ্যে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে পরিবারগুলোর মধ্যে। বাকি সাত কোটি টাকা অর্থ বিতরণ করতে মোবাইল ব্যাংকিয়ের ফি হিসেবে খরচ হবে। অর্থাৎ উপকারভোগী পরিবারগুলোকে টাকা তুলতে কোনো খরচ করতে হবে না।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এই তালিকা তৈরি করেছেন। ভাতা পাওয়ার তালিকায় আছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষ।
তালিকাভুক্তদের মধ্যে নগদ, বিকাশ, রকেট, ও শিওরক্যাশের মাধ্যমে সরাসরি চলে যাবে এই টাকা। ফলে উপকারভোগীদের কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। আবার টাকার খরচ সরকার বহন করবে বলে তাদের কোনো খরচও হবে না। ফলে উপকারভোগী পরিবার আড়াই হাজার টাকার পুরোটাই তুলতে পারবেন।
এর আগে থেকেই ৫০ লাখ পরিবারের প্রায় দুই কোটি সদস্য ভিজিএফ কার্ডের আওতায় সরকারের সহায়তা পেয়ে আসছেন। নতুন এই কর্মসূচির আওতায় এক কোটি পরিবার বা মোট চার কোটি মানুষ আসছেন সরকারি সহায়তার আওতায়।
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল সারাবাংলাকে বলেন, এই উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু ব্যবস্থপনার দায়িত্বে রয়েছি। গ্রাম-শহরের মিলিয়েই এ সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা ঈদের আগেই অসহায় দরিদ্র কর্মহীন মানুষদের মধ্যে এই অর্থ বিতরণ করব, যেন সবার সঙ্গে তারাও ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন।
সিনিয়র সচিব আরও বলেন, এই শ্রেণিপেশার মানুষদের সহায়তা দিতে এপ্রিল মাসে প্রধামন্ত্রী ঘোষণা দেওয়ার পর প্রথমে প্রতি পরিবারকে ১ হাজার করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে আড়াই হাজার করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। টাকা বিতরণের জন্য এরই মধ্যে সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন-
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে দেওয়া হবে নগদ অর্থ
২ কোটি মানুষকে সহায়তা ৫০ লাখ পরিবার ৫০ লাখ পরিবারকে সহায়তা নগদ অর্থ সহায়তা