আম্পান মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক
১৯ মে ২০২০ ০১:১৫
ঢাকা: ধীর গতিতে হলেও ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ একটু একটু করে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। পথে বাড়িয়ে নিচ্ছে বাতাসের গতিবেগ আর ঘূর্ণাবর্তের শক্তি। তবে এই ঝড়কে মোকাবিলা করতে সরকারিভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রস্তুত আছে সেনাবাহিনীও।
সোমবার (১৮ মে) উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ‘আম্পান’ মোকাবিলায় দিনব্যাপী স্বেচ্ছাসেবকদের যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি সেনাক্যাম্পগুলোর তত্ত্বাবধানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুরো মহড়াটি তদারকি করছে ১০ম পদাতিক ডিভিশন।
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ থেকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার পাশাপাশি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো ও উদ্ধার কার্যক্রমে দেশি-বিদেশি সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার জন্য এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, আরআরসি, এনজিও, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও ক্যাম্পে বসবাসরত প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নেন।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ক্যাম্পে সেনাসদস্যদের নেতৃত্বে মাঝি, সাবমাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের আপৎকালীন দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে উদ্ধার যান ও প্রয়োজনীয় উদ্ধার সামগ্রী।
এছাড়া জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিও এবং আইএনজিও সংস্থাগুলোর সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে আপৎকালীন সময়ের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেছে সেনাবাহিনী। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিভাবে কাজ করতে হবে, সে বিষয়েও ব্রিফ করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আপৎকালীন সময়ের জন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার যেমন মুড়ি, চিড়া, গুড় ইত্যাদি প্যাকেটজাত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে এরই মধ্যে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।
সেনানিবাস কর্তৃক জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহ ও বিভিন্ন তথ্যের জন্য রামু সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশের উপকূল লক্ষ্য করে এগোচ্ছে। এর কেন্দ্রে বাতাসের গতি এখন ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টির উপকূলের দিকে এগিয়ে আসার গতিবেগও বেড়েছে।
বাংলাদেশে আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকার সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভারতের উড়িষ্যা উপকূল থেকে বাংলাদেশ উপকূল পর্যন্ত সমুদ্রের আচরণ ক্রমাগত আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে।