কোথায় আঘাত হানবে ‘আম্পান’
১৯ মে ২০২০ ০৯:২১
ঢাকা: জন্মের পর গতি বেশ কমই ছিল, তবে মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে বাংলাদেশে উপকূলের দিকে গতি বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ ছুঁয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। পুরো একদিন আম্পানের প্রভাবে সারা বাংলাদেশে ঝড় বয়ে যাবে। দেশের অভ্যন্তরে এটি তাণ্ডব না চালালেও বজ্রসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের আশঙ্কা করা যায়।
সোমবার রাতে আবহাওয়া অধিদফতরের ভূ-উপগ্রহের চিত্র বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানা গেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ‘এবারের ঝড়ে খুলনা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।’
ধারণা করা হচ্ছে ২০ মে সন্ধ্যার পর বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। ২১ মে সারাদিন জুড়ে এই ঝড়ের প্রভাব থাকবে দেশের সবখানে। তবে ঝড়টির প্রভাবে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে সেটি এখনই অনুমান করা যাচ্ছে না। এটি নির্ভর করবে ‘আম্পান’ কতটা শক্তি নিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করছে, তার উপর।
আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এখন পর্যন্ত এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশর উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এর কেন্দ্রের ৯০ কিমির মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটা যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে কোনো ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের ওপরে উঠে গেলে তাকে ‘সুপার সাইক্লোন’ বলা হয়।
পায়রা-মোংলায় ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত
এর প্রভাবে সাগর প্রবল বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে পুনরায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে পুনরায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদতফরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান সমুদ্রে প্রচুর শক্তি অর্জন করেছে। এখন এটির আছড়ে পড়ার পালা। সেটিও আজ-কালের মধ্যেই হয়ে যাবে।’
এর আগে, ১৯৭০ সালের বাংলাদেশে আঘাত করা সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার। ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের সর্বোচ্চ গতিবেগ ২২৩ কিলোমিটার। এই ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যেই সেই গতিবেগ ছাড়িয়ে গেছে। তাই এটি যদি সরাসরি দেশের উপকূলে আঘাত হানে তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে।