কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে এখনও চালু হয়নি ১৬টি আইসিইউ
২২ মে ২০২০ ২১:১৩
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালের নাম। এই হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবার আগে ঘোষণা দেওয়া হয় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নাম। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ হাসপাতালে ২৬টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) প্রস্তুত রাখার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রায় তিনমাস পার হয়ে গেলেও হাসপাতালের একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে এখনও ১০টি আইসিইউ বেডেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। বাকি ১৬টি আইসিইউতে এখনও কোনো রোগী ভর্তি রাখা হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ জানালেন জনবল সংকটের কথা। বলছেন, খুব দ্রুতই চালু করা হবে এই আইসিইউগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া।
এর আগে, ৫ এপ্রিল সারাবাংলায় সংবাদ প্রকাশিত হয় ‘কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল: নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ, খাবার আসে বাইরে থেকে’ শিরোনামে। সেই সংবাদে বলা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতর ২৬টি আইসিইউয়ের কথা বললেও বাস্তবে এই হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ১০টি। তবে তার সবগুলোকেও পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ দাবি করা যায় না। তাছাড়া রয়েছে জনবলের ঘাটতি। আবার কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে খাবার বরাদ্দ থাকলেও চিকিৎসকদের খাবার আসছে বাইরে থেকেই। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেক তথ্যের সঙ্গেই বাস্তবতার মিল নেই।
সে সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিষয়গুলো অস্বীকার করা হয়। ৫ এপ্রিল বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শিহাব উদ্দিনের কাছে জনবল সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেছিলেন, এখানে কোনো জনবল সংকট নেই। আমি যা বলছি, তা ঠিকই বলছি। এই কথা আমাকে শোনাচ্ছেন কেন? সবাই এখানে ডিউটি করছে। বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন সেকশনে ডিউটি ভাগ করা আছে।
সেই রিপোর্টের পরবর্তীতে অবস্থার কিছুটি উন্নতি হলেও ২৬টি আইসিইউ বেড তখনো চালু করা যায়নি।
এ নিয়ে ১৩ এপ্রিল সারাবাংলায় আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয় ‘করোনা চিকিৎসায় কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল?’ শিরোনামে।
আগের সংবাদে অস্বীকার করা হলেও এই সংবাদে আইসিইউ’র জনবল বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, আইসিইউতে বর্তমানে যে রোগী আছে, তার জন্য যে জনবল ঠিক আছে। তাছাড়া আমাদের ২৬টি আইসিইউ’র জন্য এখনো লোক নিয়োগ হচ্ছে। আজকেও দু’জনের নিয়োগ হয়েছে। অন্যান্য জায়গা থেকে লোক দেওয়া হচ্ছে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা যারা কাজ করতে আগ্রহী, তাদের নাম লিস্ট করে পাঠাব। যে আগ্রহী না, তাকে তো অর্ডার দিয়েও লাভ হয় না।
২১ এপ্রিল পর্যন্ত ২৬টি আইসিইউর মধ্যে ১০ টি চালু হলেও বাকি ১৬ টি এখনো চালু হয় নি বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে হাসপাতালের একাধিক সূত্র।
এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুতই সেগুলো চালু করব। আজ কালের মধ্যে আমাদের এখানে জনবল নিয়োগ নেওয়া হবে। আশা করছি, এর পরেই আমরা সেই ইউনিটগুলো চালু করতে পারব।’
তিন মাসেও হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ হয়নি। হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের এ বক্তব্যের পরে যোগাযোগ করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আমিনুল হাসানের মোবাইলে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।