Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানী ফিরছে লাখো মানুষ


২৮ মে ২০২০ ১১:২১

ঢাকা: করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে এবার রাজধানীতে ফিরছে লাখো মানুষ। দেশের সবগুলো মহাসড়কে এখন রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা যাচ্ছে। ফেরিঘাটে সকাল থেকে ভিড় বেড়েছে ব্যাক্তিগত যানের। সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ার পরপরই রাজধানীতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বহু মানুষ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সকাল থেকে রাজধানীর প্রবেশ পথ গাবতলী, আব্দুল্লাহপুর সায়েদাবাদ, মাওয়া ঘাটে দেখা যায় রাজধানী ফেরত মানুষদের ভিড় বেড়েই চলছে। তবে এখনও কোনো বাস রাজধানীতে ঢোকেনি। ঘাটগুলোতে মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ ব্যাটারিচালিত যানে এসে ভিড় করছেন রাজধানমুখী মানুষ।

বিজ্ঞাপন

দৌলদিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকায় ফেরা একটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ৩টি মোটরসাইকেলযোগে দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছেন। এরপরে ফেরিতে উঠে ৯টার মধ্যে আরিচা ঘাট দিয়ে ঢাকার পথে ফিরছেন। বাকি পথ একটি প্রাইভেট কারে চারগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে আসছেন। সতকর্তার জন্য তারা শুধু মাস্ক পরেছেন।

গাবতলী এলাকায় দেখা গেছে, বাস ছাড়া বাকি সব ধরণের যানবাহনে মানুষ ঢুকছেন রাজধানীতে। আগের মত পুলিশের চেকপোস্টে কড়াকড়ি নেই। বেশিরভাগ ফিরছেন ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে করেই। যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই তারা ফিরেছে ভাড়া করা বিভিন্ন গাড়িতে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব গাড়িতে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মানা হয়নি। একেকটি প্রাইভেট কারে ৫ জনের জায়গায় ৭ থেকে ৮ জন চেপে বসে আসছেন।

সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না, অফিস চলবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে

 

বিডব্লিউটিএ জানায় জানান, ৭টি ফেরি চলাচল করছে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া ঘাটে। প্রচুর সাধারণ মানুষ ব্যাটারিচালিত যানবাহনে ঘাটে এসে ভিড় করছেন। যদি ভিড় আর বাড়ে সেক্ষেত্রে ফেরি সংখ্যাও বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

বিজ্ঞাপন

দক্ষিণাঞ্চলের আরেকটি প্রবেশদ্বার মাওয়া ঘাটে দেখা গেছে, ঢাকামুখী প্রাইভেট গাড়ির সারি। ঘাটের পুলিশ ফাঁড়ি ইনচাজ সাখাওয়াত জানান, গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ি যারা গিয়েছিলেন তাদের এখন বেশি দেখা যাচ্ছে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় সাধারণ ছুটির তুলে নেওয়ার সঙ্গে গণপরিবহন চলাচলে বিধি-নিষেধ তুলে নিয়ে সীমিত পরিচরে চলাচলের কথা বলা হয়। ৩১ মে থেকে বাস ও নৌ এবং রেল চলাচল শুরু হবে।

রেলওয়ে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান জানান, রেল যেকোনো সময় ছাড়ার জন্য তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ৩১ মে থেকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ট্রেন চলবে। এক্ষেত্রে সব ট্রেন একসঙ্গে ছাড়া নাও হতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য যেসব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তা নিয়ে আজকালের মধ্যে বৈঠকে চূড়ান্ত হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানান, বাস ছাড়ার জন্য মালিকরা নিজেদের মধ্যে আজ বৈঠক করবেন।

নৌ মালিক সমিতির সহ সভাপতি ও পারাবত লঞ্চ মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, ‘সামাজিক দূরত্ব মেনে লঞ্চ ছাড়া সম্ভব নয়। আর যদি এভাবে চলতে হয় তাহলে অর্ধেক যাত্রী তুলতে হবে, ভাড়া আসবে বেশি। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক না করেই গণপরিবহন ছাড়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সরকার। এখন আমরা নৌমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছি। নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ করোনার পরিস্থিতিতে নৌ চলাচল নিয়ে কোনো বৈঠকই করেননি। তারাও নৌ প্রতিমন্ত্রীকে কাছে পাননি– বলে অভিযোগ করেন তিনি।

৩১ মে’র পর সীমিত পরিসরে চলবে গণপরিবহন

এদিকে, জুন মাসে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই জুনে করোনা প্রতিরোধে আরও কড়াকড়ি আরোপের পরামর্শ ছিল বিশেষজ্ঞদের।

সরকারি হিসাবমতে, প্রতি বছর ঈদের সময়ে ব্যক্তিগত যানসহ গণপরিবহনে রাজধানী ছাড়েন গড়ে প্রায় ১ কোটি মানুষ। এবারের ঈদে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরবাইক, সিএনজিসহ নানা উপায়ে রাজধানী ছেড়েছেন অন্যান্য বারের ১০ ভাগের একভাগ অর্থাৎ ১০ লাখ মানুষ।

বিআইডব্লিউটিএ ও যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসেবে, ঈদের আগের ৭ দিনে মাওয়া ও পাটুরিয়া দিয়ে বাড়ি গেছেন ৫ লাখ মানুষ। আর সড়কপথে অন্যান্য জেলায় গিয়েছেন আরও প্রায় ৫ লাখ।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ফেরিঘাট মহাসড়ক রাজধানীতে ফেরা লাখো মানুষ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর