Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমেরিকায় গণবিক্ষোভের মুখে প্রধান প্রধান নগরীগুলোতে কারফিউ


৩১ মে ২০২০ ২৩:০৪

আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের মুখে নিরস্ত্র আফ্রো-আমেরিকান জর্জ ফয়ডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার (৩০ মে) রাত থেকে নতুন করে বর্ণবাদ ও পুলিশি নির্যাতনবিরোধী গণবিক্ষোভ দানা বাধতে শুরু করেছে। সহিংসতা এড়াতে লস এঞ্জেলেস, আটলান্টা, মিয়ামি, ফিলাডেলফিয়াসহ প্রধান প্রধান নগরীগুলোতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। খবর এএফপি, বিবিসি, সিএনএন।

এ ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মিনিয়াপোলিসে বিক্ষোভের নামে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চলেছে। এর পেছনে র‍্যাডিকেল বামপন্থিদের ফ্যাসিজমবিরোধী নেটওয়ার্ক অ্যান্টিফা জড়িত আছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেছেন – তাদের কর্মকান্ডে ফয়েডের স্মৃতির প্রতি অবমাননা হয়েছে। এই উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিক্ষোভ দমনে পুলিশকে কঠোর হবার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত সপ্তাহের সোমবার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফয়েডকে পুলিশ আটক করে। পরে পুলিশ হেফাজতে একজন শ্বেতাঙ্গ অফিসারের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়। ডেরেক চৌভিন নামের ওই অফিসারকে চাকরিচ্যুত করে জেল হাজতে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফয়েডের মৃত্যুর ব্যাপারে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, তাকে আটকের পর এক পুলিশ কর্মকর্তা মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে ৯ মিনিট ঘাড় চেপে ধরে রাখে। এবং তাতে শ্বাস-প্রশ্বাস আটকে গিয়ে ফয়েডের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা আমেরিকায় কৃষাঙ্গদের ওপর চলে আসা পুলিশি বর্বরতার প্রতীক হিসবে বিশাল বিক্ষোভ এবং ব্যাপক সামাজিক বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়াল্টজ এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি তার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢেলে সাজাবার ঘোষণাও দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এই সরকারি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশব্যাপী হাজার হাজার লোক রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় উত্তেজিত জনতা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ইস্যুতে লস এঞ্জেলেসের বিক্ষোভ দমনে পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। জবাবে, বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে পুলিশের গাড়িতে। পরে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে। শিকাগো এবং নিউইয়র্কেও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অনেককেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই সময় বিক্ষোভস্থল থেকে আমেরিকাভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএন এর একজন প্রতিবেদক ও ক্যামেরা পার্সনকে আটক করে পুলিশ।

এছাড়াও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সেনা সমাবেশ ঘটানোর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে স্থানীয় গাণমাধ্যমগুলো।

অন্যদিকে, শনিবার (৩০ মে) সন্ধ্যা থেকেই বিক্ষোভকারীরা মিনিয়াপোলিস, নিউইয়র্ক, শিকাগো, মিয়ামি, ফিলাডেলফিয়া এবং অন্যান্য নগরীর রাস্তায় নেমে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে কানাডার টরেন্টোতে। বিভিন্ন জমায়েত থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা ‘ব্লাক লাইভস ম্যাটার’ এবং ‘আই কান্ট ব্রেথ’ বলে শ্লোগান দেয়।

প্রসঙ্গত, শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কৃষ্ণাঙ্গ ফয়েডের ঘাড় চেপে ধরা অবস্থায় মৃত্যুর আগে সে বারবার বলছিল – ‘আই কান্ট ব্রেথ’।

জর্জ ফ্রয়েড পুলিশি নির্যাতন বর্ণবাদ মিনেসোটা যুক্তরাষ্ট্র

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর