Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিজেন কিটে ত্রুটি!


৩ জুন ২০২০ ০০:২৭

ঢাকা: করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে নিজেদের উদ্ভাবিত জিআর কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটে ত্রুটি পেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে এই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছে তারা। তবে অ্যান্টিবডি টেস্টের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও মতামতের কাজ আগে শেষ করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে রিপোর্ট দিতে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২ জুন) বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কাছে পাঠানো এক লিখিত আবেদনে এ অনুরোধ জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লোট প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার। সারাবাংলার কাছে এই চিঠির একটি কপি রয়েছে।

বিএসএমএমইউতে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও মতামতের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরামর্শে ৫০০ অ্যান্টিবডি কিট ও ৫০০ অ্যান্টিজেন কিট হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনপত্রে বলা হয়, অ্যান্টিজেন কিটের আভ্যন্তরীণ কার্যকারিতা পরীক্ষায় নমুনা হিসেবে লালা সংগ্রহের কোনো ইনভ্যাসিভ প্রসিডিউর প্রয়োজন হয় না। লালা ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়ায় আমাদের আবেদনে আপনারা নমুনা হিসেবে লালা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছেন।

আবেদন পত্রে বলা হয়, সম্প্রতি জিআর কোভিড ১৯ র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের নমুনা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহে অসামঞ্জস্যতা পাওয়ায় সঠিক ফলাফল নির্ণয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন শনাক্তকরণের জন্য যথাযথ উপকরণ লালার নমুনায় থাকছে না বা অন্য বস্তুর মিশ্রণ লক্ষণীয়। সম্মিলিত মনিটরিং টিম এই সমস্যাটি চিহ্নিত করেছে। গণস্বাস্থ্য আরএনএ বায়োটেক টিম এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের আরএন্ডডি ল্যাবে সুনির্দিষ্টভাবে সর্বোপরি ব্যবহার যোগ্য লালা সংগ্রহ পদ্ধতি প্রয়োগের কাজ শুরু করেছে। শিগগিরই বিষয়টি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানাতে পারবে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

এ অবস্থায় গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, আমাদের লালা সংগ্রহের সঠিক পদ্ধতি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটটির পরীক্ষা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা এই দুইটি লট ফেরত এনে নতুন লট বদলে দেবো।

বিজ্ঞাপন

তবে অতি দ্রুত অ্যান্টিবডি কিটের সকল কাজ শেষ করে তার ফলাফল ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে দিতে চিঠিতে অনুরোধ জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এদিকে, মঙ্গলবার প্রায় মধ্যরাতে গণস্বাস্থ্যের এই চিঠি সারাবাংলার হাতে এসে পৌঁছায়। এরপর এ চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লোট প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার ও প্রকল্পের প্রধান ড. বিজন শীলকে ফোন দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি। অন্যদিকে, বিএসএমএমইউ’র ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ মুন্সী ফোন ধরলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এর আগে, নিজেদের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা বিষয়ে জোরালো অবস্থান জানিয়ে আসছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাদের সহযোগিতা করছিল না বলেও অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির। এখন গণস্বাস্থ্য নিজেই তাদের অ্যান্টিজেন কিটের ত্রুটির বিষয়টি বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে।

চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘থুতু থেকে নেওয়া নমুনা আমাদের অ্যান্টিজেন কিটের মাধ্যমে টেস্ট করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু যেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে অনেক সময় দেখা যাচ্ছে নমুনায় থুতুর বদলে কফ চলে আসছে। সে ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা এই অসঙ্গতির বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।’

জাফরুল্লাহ আরও বলেন,  ‘আমরা অ্যান্টিবডি কিটের কাজকে দ্রুত সম্পন্ন করতে বলেছি ও অ্যান্টিজেন কিটের ক্ষেত্রে একটু ধীরে চলার জন্য বিএসএমএমইউ কর্তৃৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

 

অ্যান্টিজেন কিট অ্যান্টিবডি কিট গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর