রূপগঞ্জে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার ৫, মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা নেই
৬ জুন ২০২০ ০২:৩২
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় চাঁদাবাজির আনীত অভিযোগে কামরুজ্জামান ও তার চার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশ্বাস সিরামিকস অ্যান্ড অটো ব্রিকস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তারা ২৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবে প্রশাসন। কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এলেও তার সঙ্গে মন্ত্রী বা তার পরিবারের কারও কোনো সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার (৫ জুন) বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকা থেকে এই পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান সারাবাংলাকে তাদের গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, চাঁদাবাজি নারায়ণগঞ্জে একটি চলমান সমস্যা। চাঁদাবাজরা বিভিন্ন সময় প্রভাবশালী মহলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করেছে। কিন্তু বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের অনুরোধ ছিল, চাঁদাবাজ ও মাদকের সঙ্গে জড়িতদের যেন ছাড় দেওয়া না হয়। মন্ত্রী আগে থেকেই বলেছেন, চাঁদাবাজ ও মাদকের সঙ্গে জড়িতরা যেই হোক, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরাও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, বেশ কিছুদিন ধরেই বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছিল। তবে মন্ত্রী নিজেই এর আগেও আমাদের জানিয়েছেন, কামরুজ্জামানের সঙ্গে তার বা তার পরিবারের কারও কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। বরং সে কোনো অপরাধ করে থাকলে তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলেন মন্ত্রী মহোদয়। এবং এ ধরনের যেকোনো ব্যক্তি চাঁদাবাজিতে নিয়োজিত হলে আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলার ও নির্দেশনা দেন মাননীয় মন্ত্রী। মন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ তিনি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এসপি জায়েদুল বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কামরুজ্জামানকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী কিংবা তার সন্তানের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী নিজেই আমাদের জানিয়েছেন, কামরুজ্জামান তার নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করছে বলে তিনি নিজেও শুনেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, চাঁদাবাজি বা মাদকের সঙ্গে জড়িত কারও স্থান যেন নারায়ণগঞ্জে না হয়, তিনি সেটিও নিশ্চিত করতে বলেছেন আমাদের।
গ্রেফতার কামরুজ্জামানের চার সহযোগী হলেন— মো. মহিউদ্দিন (৩২), তাপদ দাস (৩১), সাজ্জাদ হোসেন (২৮) ও রনি ভূঁইয়া। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় মো. রাজু ও মো. সুমন মিয়া নামে আরও দু’জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।