১১ মাসে ব্যাংক থেকে ৬৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার
৬ জুন ২০২০ ১৩:১৫
ঢাকা: বাজেটের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ বাড়ছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম এগারো মাসে (জুলাই-১৯ থেকে মে-২০) সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ১৬ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা বেশি। আর গত পুরো অর্থবছরের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবিলায় বৈদেশিক উৎস থেকে ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা এবং ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। এ ছাড়াও ২৭ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে এবং অন্যান্য উৎস থেকে আরও ৩ হাজার কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু গত মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব দেখা দেওয়া এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমে যায়। এতে বাজেটের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার ব্যাংক ঋণনির্ভর হয়ে পড়ে এবং ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত মে মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের এখনও আরও এক মাস বাকি। ফলে আগামী মাসে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলেও জানা গেছে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারের একদিকে রাজস্ব আয় কমে গেছে। বিপরীতে সরকারের ব্যয় বেড়ে গেছে। সরকারের নিয়মিত ব্যয়ের পাশাপাশি ত্রাণসহ বিভিন্ন প্রণোদনা খাতে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতার নেমে এসেছে। ফলে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। অনেকক্ষেত্রে আমদানি পণ্যে শুল্ক ছাড় দিতে হয়েছে। এসব কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণ-নির্ভরতা বেড়েছে।
উল্লেখ চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে চুড়ান্ত আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।এটি জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতয়ি রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আয় ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১১ শতাংশ। এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব আয় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। আর কর বহির্ভূত রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ।