৪২ দিনেও মৃতদেহ নেয়নি পরিবার, সাংবাদিকের হস্তক্ষেপে দাফন
৬ জুন ২০২০ ১৩:২৯
ময়মনসিংহ: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে মারা যাওয়ার পর ৪২ দিন পেরিয়ে গেলেও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমাগার থেকে শ্রমিক আরাফাত হোসেনের (১৭) মরদেহ নিয়ে যায়নি তার পরিবার। করোনা আতংকে এলাকাবাসীর চাপে মৃতদেহ গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন তার বাবা। পরে সাংবাদিকেরে হস্তক্ষেপে দাফন করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, ত্রিশালের চড়ইতলি গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে আরাফাত হোসেন গাজীপুরে বেকারি শ্রমিকের কাজ করতেন। আরাফাত হোসেনকে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া জনিত সমস্যা নিয়ে গত ২০ এপ্রিল ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে করোনার উপসর্গ নিয়ে ২২ এপ্রিল মারা যাযন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরাফাতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমাগারে রাখে। দুই দিন পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে করোনা নেগেটিভ ফল আসে। এরপরও আরাফাতের পরিবার মরদেহ নিতে আসেনি।
ওসি জানান, দীর্ঘদিনেও আরাফাতের মরদেহ পরিবারের পক্ষ থেকে না নেওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানাকে অবহিত করে। আরাফাতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাবা মজনু মিয়া থানায় এসে মৃতদেহ নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে একটি আবেদন জানান। মৃতদেহ ইসলামী শরিয়া মোতাবেক দাফনের জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে আরাফাতের বাবা মজনু মিয়া জানান, করোনা সন্দেহে আরাফাতের মারা যাওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাবাসী তার মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে এলাকায় না আনার জন্য চাপ দেয়। স্থানীয় লোকজনের বাধার কারণে ছেলের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়িতে আনতে পারিনি। সবাই ভেবেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ না করায় হয়তোবা আরাফাতের মৃতদেহ সরকারিভাবে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। থানা থেকে খবর আসার পরে জানতে পারি এখনও মৃতদেহ হাসপাতালের হিমাগারে আছে।
এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে ছেলের মৃতদেহ আনতে অনীহা প্রকাশ করে থানায় আবেদন করেছেন বলে জানান মজনু মিয়া।
পরে ত্রিশালের স্থানীয় ও ময়মনসিংহ টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ফারুক বিষয়টি জানার পর আরাফাতের মৃতদেহ পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে ত্রিশালে তার বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা করেন।